সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জলবায়ুর পরিবর্তনে ক্রমশ তপ্ত হয়ে উঠছে পৃথিবী। প্রভাব পড়ছে গোটা বিশ্বের খাদ্যবন্টনে। চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। এই অবস্থায় বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global Warming) অতিরিক্ত তাপমাত্রাতেও যাতে খাদ্যশস্য উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে তা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তারই ফল মিলল এবার। এক বিশেষ ধরনের আলুর প্রজাতি তৈরি করে ফেললেন আমেরিকার বিজ্ঞানীরা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপার পটেটো’ (Super Potato)।
আমেরিকার মাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের (Mine University) একদল গবেষক সুপার পটেটো তৈরি করেছেন। অতিরিক্ত তাপমাত্রাতেও এই আলু উৎপাদন করা যাবে। জলবায়ুর পরিবর্তন এই ধরনের আলুর গুণমানে প্রভাব ফেলতে পারবে না। খাদ্যশস্য বিজ্ঞানী অধ্যাপক গ্রেগোরি পোর্টার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাড়তে থাকা তাপমাত্রা ও কঠিন জলবায়ু ভবিষ্যতে খাদ্যশস্যের গুণমানের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করবে। এর ফলে বিভিন্নরকম অসুখও দেখা দিতে পারে।
অধ্যাপক পোর্টারের কথায়, “অতিরিক্তি বৃষ্টিপাত, বন্যা পরিস্থিতি আলু উৎপাদনের পক্ষে প্রতিকূল। এর ফলে কোনওভাবে আলু ফলানো গেলেও তা হবে সাধারণ আলুর তুলনায় নিম্নমানের। আমাদের যদি আগের মতোই আলু উৎপাদন চালিয়ে যেতে হয়, তবে জলবায়ু পরিবর্তন সহ্য করতে পারে এমন প্রজাতির আলুর প্রজাতি তৈরি করতে হবে।” সেই লক্ষ্যেই ‘সুপার পটেটো’ তৈরি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বৃহস্পতির অতিকায় ঝড় গিলে নিতে পারে হাজার পৃথিবীকে, প্রমাণ দিল নাসার যান]
উল্লেখ্য, এর আগেও মাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা অন্য একটি আলুর প্রজাতি তৈরি করেছিলেন। খাদ্যশস্য গবেষকরা এখন মনে করছেন, সেই আলুও বিশ্ব উষ্ণায়নে টিকে থাকার পক্ষে কমজোরি। ইতিমধ্যে আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে সুপার পটেটো উৎপাদনের পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা ও ফ্লোরিডায় অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ফলানো হয়েছে এই বিশেষ জাতের আলু। গবেষকরা জানিয়েছেন, আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বের বাজারে এই আলু মিলবে দুই থেকে পাঁচ বছর বাদে।
[আরও পড়ুন: মহাকাশ বর্জ্যের সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারে ইউরোপীয় যানের! বিপদ এড়াতে সতর্ক বিজ্ঞানীরা]
প্রসঙ্গত, নাসার বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, বাড়তে থাকা গ্রিন হাউজ গ্যাসের ফলে ২০৩০ সালের পরে আরও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে এই গ্রহের জলবায়ুতে। কোথাও যেমন তাপমাত্রা বাড়বে অত্যাধিক হারে, কোনও অঞ্চল আবার অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে প্লাবিত হবে। এই পরিস্থিতি খাদ্যশস্যের উৎপাদন ও বণ্টনে প্রভাব ফেলবে। সেই ভবিষ্যৎ পৃথিবীর কথা মাথায় রেখেই ‘সুপার পটেটো’ তৈরি করেছেন মাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।