সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনের দুটো পা একটু ছোট। অনেকটা হাতের মতো কাজ করে। পিছনের পায়ে ক্ষিপ্র গতি। দ্রুতবেগে ছুটতে পারে এদিক-ওদিক। প্রকৃতিতে সরীসৃপ। গোটা গায়ে প্রবল শুষ্ক, খসখসে চামড়া।
বর্ণনা শুনে ভাবতে বসে গেলেন কোন প্রাণী? নাঃ, ভেবে বোধহয় কুলকিনারা পাবেন না। কারণ, এ প্রাণী তো আজকের পৃথিবীতে নেই। এই বর্ণনা কেবলই শিল্পীর কল্পনায়, এই ছবি ফুটে ওঠে শিল্পীর তুলিতে। তবে হ্যাঁ, একটা সময় এমনই অদ্ভূতদর্শন সরীসৃপ দৌড়ে বেরিয়েছিল এই ধরাধামেই। বুকে ভর দিয়ে গতিশীল হওয়ার বদলে দু’পায়ে দৌড়েই ছাপ রেখে গিয়েছিল। কোটি কোটি বছর পর সেই সরীসৃপের জীবাশ্ম আবিষ্কার করে বিজ্ঞানীদের বিস্ময়ের ঘোর যেন কাটছে না।
[আরও পড়ুন: রাতারাতি জলের রং বদলে হল গোলাপি, মহারাষ্ট্রের এই হ্রদের রহস্য কী?]
অবিকল যেন উটপাখি। নামে পাখি হলেও, আকাশচারী হওয়ার বদলে তারা দ্রুত পায়ে স্থলভূমিতে দৌড়ে বেড়ায়। প্রায় সাড়ে ১১ কোটি বছর আগে উটপাখির মতোই এক প্রজাতির কুমির ছিল, যারা এভাবে হেঁটে, চলে, দৌড়ে বেড়াত। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার এক সংগ্রহশালায় এধরনের ফসিল দেখতে পেয়ে একদল বিজ্ঞানী তা নিয়ে গবেষণা করতে করতে সন্ধান পেয়ে যান ওই কুমিরের। আমেরিকার কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্টিন লকলি বলছেন, ”কুমির সাধারণত অলস প্রকৃতির, নদীর ধারে গা এলিয়ে পড়ে থাকে। নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তেমন ব্যবহার করার স্পৃহা নেই। অথচ, এই প্রজাতির কুমিরের ফসিল দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি এই ভেবে এরা কীভাবে ব্যতিক্রম হল! টি-রেক্সের মতো এরা দ্বিপদগামী।”
[আরও পড়ুন: আগামী ৮০ বছরে ভারতের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হবে ধ্বংসাত্মক! বলছেন গবেষকরা]
দক্ষিণ কোরিয়ার চিনজু ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কিউং সো কিম ফসিলগুলি ভালভাবে পরীক্ষা করার পর বলছেন, ”সামনে পা দুটোর অবস্থান হাতের মতোই। বুকের কাছে ঝোলা অবস্থায় ওরা হাঁটত পিছনের পা দিয়ে। সামনের কোনও পদচিহ্ন পাওয়া যায় না। একটা কুমির দড়ির উপর দিয়ে চলে গেলে যেমন হয়, তেমনই ছিল এদের গতিপথ।” পায়ের ছাপ পরীক্ষা করে তাঁরা আরও বুঝতে পেরেছেন, মানুষ যেমন প্রথমে গোড়ালিতে ভর দিয়ে হাঁটে, ওরাও তাই হাঁটত। গবেষকদের মতে, এই ফসিল উদ্ধার এবং গবেষণার ফলাফল কুমির সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণাই বদলে দেবে। সত্যি, এমনও ছিল কুমিরের জাতভাই!
The post দু’পায়ে ভর দিয়ে হাঁটত কুমির! কয়েক কোটি বছরের পুরনো জীবাশ্ম দেখে তাজ্জব বিজ্ঞানীরা appeared first on Sangbad Pratidin.