অভিরূপ দাস: প্রথম দশে রাজ্যের সাত। আর সাত রত্নের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সেভন ওয়ান্ডারসেরই বাড়ি কলকাতায়। জয়েন্ট এনট্রান্সে জেলাগুলোকে কয়েক যোজন পিছনে ফেলে দিল তিলোত্তমা। শুধু তাই নয়। দেখা গিয়েছে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলি অনেক ভাল রেজাল্ট করেছে শহরতলি, মফস্বলের বাংলামাধ্যম স্কুলগুলির তুলনায়। জয়েন্ট এনট্রান্স বোর্ড সূত্রে খবর, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রথম অভিনন্দন বসু দক্ষিণ কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ছাত্র। দ্বিতীয় দেদীপ্য রায় পড়তেন সল্টলেকের হরিয়ানা বিদ্যামন্দিরে। তৃতীয় অর্চিষ্মান সাহা, ডিপিএস রুবি পার্কের ছাত্র।
[ প্রকাশিত জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল, প্রথম সাউথ পয়েন্টের অভিনন্দন বসু ]
বাকি মেধাতালিকাতেও দশের মধ্যে নেই জেলার কোনও ছাত্র-ছাত্রী। সেরাদের লিস্টে দূরবিন দিয়ে খুঁজতে হচ্ছে জেলার ছেলেমেয়েদের। চতুর্থ থেকে দশমের মধ্যে শুধু দুর্গাপুরের ঋত্বিক গঙ্গোপাধ্যায় (সপ্তম) রাঁচির অভিষেক শ্রীবাস্তব (নবম), বিশাখাপত্তনমের আয়ুশী বেদান্ত (দশম)। কেন কলকাতার তুলনায় পিছিয়ে পড়ল জেলার স্কুলগুলো? বোর্ড সূত্রে খবর, পুরনো প্রশ্নের ধাঁচ বদলে জয়েন্ট এনট্রান্সের প্রশ্নপত্র এখন অনেকটাই সর্বভারতীয় ধাঁচের। কৃতী ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন, এখন ওয়েস্টবেঙ্গল জয়েন্টে অংশ নিতে ভিন রাজ্য থেকেও আসছে পড়ুয়ারা। এই ধরনের প্রশ্নপত্র তারা ছোটবেলা থেকেই প্র্যাকটিস করে আসছে। ফলে প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভিন রাজ্যের স্কুলের সিলেবাস অনেক ক্ষেত্রে আরও বেশি আধুনিক। সেক্ষেত্রে স্কুল ছাড়াও কোচিং সেন্টারের উপর অনেকখানি নির্ভর করতে হচ্ছে।
[ বিমানবন্দরে পটল চিরে মিলল ৪৭ লক্ষের বিদেশি নোট, থ শুল্ক কর্তারা ]
শুধুমাত্র সঠিক উত্তর লেখাই নয়, ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ও একটি মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সমস্ত উত্তর জানলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা লিখতে পারছেন না ছাত্র-ছাত্রীরা। আর চটজলদি সঠিক উত্তর লেখার এই কায়দাই শেখানো হয় কোচিং সেন্টারগুলিতে। কলকাতার কৃতীরা বলছেন, মফস্বলে এই ধরনের কোচিং সেন্টারের অভাব রয়েছে। সেখানে শুধুমাত্র পাঠ্য বইয়ের উপরেই নির্ভর করে এগোতে হয় পড়ুয়াদের। ফলে বোর্ডের পরীক্ষায় সাফল্য এলেও সর্বভারতীয় পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে জেলার স্কুলগুলি। জয়েন্টে প্রথম স্থান অধিকারী অভিনন্দন বসু জানিয়েছেন, “পরীক্ষার আগে আমরা বন্ধুরা মিলে গ্রুপ স্টাডি করতাম। এতে অভিজ্ঞতার আদান প্রদান হত। এছাড়াও পরীক্ষার আগে নিয়মিত ‘মক টেস্ট’ দিতাম। মফস্বলের পুরনো গতে বাঁধা ছকের পড়াশোনা এই জায়গাগুলোতেই পিছিয়ে পড়ছে।”
অন্যদিকে শহরের আনুষঙ্গিক সুবিধাকেও মস্ত পাওনা হিসেবে ধরছেন সেরাদের অভিভাবকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সকালে স্কুল সেখান থেকে কলকাতার তিন প্রান্তে তিনটে কোচিং সেরে রাতে বাড়ি ফেরা। শহরে অনেক রাত পর্যন্ত পরিবহণের এই সুবিধাগুলো রয়েছে। মফস্বলের এই অন্তরায়গুলো কাটিয়ে উঠতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে।
The post জয়েন্টের প্রথম দশে কলকাতার সাত রত্ন appeared first on Sangbad Pratidin.