সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃতীয়বার দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদি। রবি সন্ধ্যায় রাষ্টপ্রতি ভবনে চাঁদের হাট। মোদির শপথগ্রহণের সুবাদে বলিউডের সঙ্গে একছাদের তলায় এল দাক্ষিণাত্য বিনোদুনিয়া। যে অনুষ্ঠানে নজর কাড়লেন শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan)। ‘জওয়ান'(Jawan)-এ শিখিয়েছিলেন আঙুলের সদ্ব্যবহার, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনী আবহেও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের কথা শোনা গিয়েছিল শাহরুখ খানের মুখে। এবার তৃতীয়বার দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানাতে গেলেন কিং খান। রবিবার দুপুরেই মুম্বইয়ের প্রাইভেট বিমানবন্দরে কালিনায় বাদশাকে প্রবেশ করতে দেখে জল্পনা শুরু হয়েছিল। এবারেও কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে বিমানবন্দরে দেখা যায় কিং খানকে। পাপারাজ্জিদেরও এড়িয়ে যান তিনি। সেই থেকেই মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে জল্পনার সূত্রপাত! ঘড়ির কাঁটায় সন্ধে পৌনে সাতটা বাজতেই সব জল্পনার অবসান। ঠিক তাই। রাষ্ট্রপতি ভবনে নজর কাড়ল 'স্যুটেড' শাহরুখের ঝলমলে উপস্থিতি। অক্ষয় কুমার, মুকেশ আম্বানি, গৌতম আদানিদের সঙ্গে দেখা গেল তাঁকে।
মোদির শপথগ্রহণে একসঙ্গে শাহরুখ-অক্ষয়।
এই প্রথমবার দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বলিউড বাদশা। শাহরুখপুত্র আরিয়ান খান মাদককাণ্ডের সময় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিলেন কিং ভক্তরা! সেইসময়ে বাদশার পাশে দাঁড়িয়ে মহারাষ্ট্র সরকার তোপ দেগেছিল গেরুয়া শিবিরকে। আরিয়ান জেলে থাকাকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দুষেছিলেন মোদিকে। তবে সেসব এখন অতীত। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির তৃতীয় ইনিংসে শুভেচ্ছা জানাতে রাষ্ট্রপতি ভবনে হাজির শাহরুখ খান। বন্ধু-অভিনেতা অক্ষয় কুমারের সঙ্গেও খোশমেজাজে ফ্রেমবন্দি হলেন কিং। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সবসময়কার ছায়াসঙ্গী পূজা দাদলানিও।
পঞ্চাশোর্ধ্ব শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan) যেন হঠাৎ করেই রাজনৈতিক ‘সচেতন’ হয়ে উঠলেন। তবে কোনওরকম রাজনৈতিক রং না মেখেও লোকসভা ভোট নিয়ে ‘জওয়ান’ সিনেমায় আমজনতাকে সচেতনতার পাঠ দিয়েছেন শাহরুখ খান (Shah Rukh Khan)। তাঁর সিনেমার সংলাপে কিং ভক্তদের অনেকেই বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ খুঁজে পেয়েছিলেন। তিন দশকের ফিল্মি কেরিয়ারে সেই প্রথমবার ছবির হাত ধরে বুক ঠুকে তিনি রাজনীতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। নির্দ্বিধায় বলেছিলেন, “৫ বছরের জন্য যখন কাউকে সরকারে আনতে ভোট দেন, তখন কি তার কাছে যাচাই করতে যান যে, বেকারত্ব ঘুচবে কিনা, শিক্ষার অধিকার পাওয়া যাবে কিনা কিংবা পরিবারের সদস্যদের কেউ অসুস্থ হলে সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে কিনা? এরপর থেকে যাচাই করে ভোট দিন।” আমজনতাকে মরচে ধরা সিস্টেমের খলনলচে বদলানোর জন্য সরকার নির্বাচনের পাঠ দিয়েছিলেন, তখনও রাজনৈতিকমহলে দড়ি টানাটানি পড়েছিল! কংগ্রেস-বিজেপি একে-অপরের দিকে দুর্নীতির অভিযোগে আঙুল তুলেছিল। এবার অতীত ভুলে নতুন মোদি সরকার গড়ার সাক্ষী থাকতে চলেছেন বাদশা।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির তৃতীয় ইনিংসে সাক্ষী থাকতে রবিবার দুপুর থেকে তারকারা পৌঁছে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতিভবনে। সেই অনুষ্ঠানে যে চাঁদের হাট বসছে, তা আগেভাগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল। রাষ্ট্রপ্রধানরা তো বটেই এমনকী গ্ল্যামারদুনিয়া থেকে কারা উপস্থিত থাকবেন? সেই কৌতূহলও ছিল। রবিবার বিকেলেই অপেক্ষার অবসান। মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দিল্লি উড়ে গেলেন রজনীকান্ত। বলিউড থেকে দেখা গেল কঙ্গনা রানাউত, অনুপম খের, অনিল কাপুর, বিক্রান্ত মাসে, রাজকুমার হিরানিকে। লোকসভায় বিজেপির টিকিটে পরাজিত প্রার্থী দীনেশ লাল যাদব ওরফে নিরহুয়াও পৌঁছে গিয়েছেন রাজধানীতে।