নির্মল ধর: জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর গল্প নিয়ে তবুও একটা সহ্যসীমার মধ্যে ছবি বানিয়েছিলেন রেশমি মিত্র (Reshmi Mitra)। তাই ধারণা ছিল, অন্তত সহনীয় কিছু এবার দেখা যাবে! কিন্তু এবার কী হল? মল্লিকা সেনগুপ্তর (Mallika Sengupta) অমন একটি সুন্দর সাজানো গল্পের করুণ পরিণতি হল সিনেমার পর্দায়। চন্দন মুখোপাধ্যায়ের চিত্রনাট্যের জোর নেই। দুঃখিত, ছবি নয়, ছবি নামের একটি জলছবি দেখে এলাম, বহুদিন এমনটি দেখিনি।
এমনিতে ‘শ্লীলতাহানির পরে’ (Shlilatahanir Pore) ছবিতে অনেক কিছুই আছে। ব্যান্ডের গান আছে, সুন্দর দু’জোড়া দম্পতি আছে, সুন্দরী নায়িকা আছে, যার দিকে আবার অফিস বসের ছুকছুকে নজর সর্বদা। ধর্ষণও আছে(সেটা অবশ্য দেখানো হয়নি)। আছেন এক সৎ নেত্রী, তাঁর স্বামীই অবশ্য অফিসের বস এবং ধর্ষক। তিনি কোম্পানির মালিক, নাকি চাকুরে, সেটা ঠিক বোঝা যায় না। এই বস আবার যেকোনও মহিলা দেখলেই উসখুশ করেন। শ্লীলতাহানির মতো কাজ করেই পালিয়ে আসেন দিঘা ছেড়ে, আর ঘরে ফিরেই বসে পড়েন মদের গ্লাস নিয়ে। বউ বেচারি, স্বামীকে বাঁচাবে, নাকি পার্টির দাদার নির্দেশ মানবে তা নিয়ে আবার এক সমস্যা। কিন্তু ধর্ষিতা তরুণী ছাড়ার পাত্রী নন। পাশে সাংবাদিক বন্ধুকে পেয়ে সোজা থানায়, FIR করে বসেন। প্রতিজ্ঞা করেন, শেষ দেখে ছাড়বেন! নেতাবাবু আবার ভোটের চিন্তায় পালটি খেয়ে যান। এভাবেই চিত্রনাট্য যে কখন কাকে কীভাবে পালটি খাওয়ালো, সেটা বুদ্ধিমান দর্শকের কাছেও এক বিরাট ধাঁধা মনে হবে।
[আরও পড়ুন: পায়ে চোট নিয়েই সিরিয়ালের শুটিংয়ে ‘রাধিকা’, এখন কেমন আছেন নায়িকা?]
আসলে কোন ঘটনা, চরিত্র কোথায় কখন, কিভাবে গুরুত্ব পাওয়া উচিত সেটাই স্থির করতে পারেননি চিত্রনাট্যকার। পরিচালক ওই অগোছালো চিত্রনাট্যকে কোনওমতে জোড়াতালি দিয়ে ছবি হিসেবে চালাবার চেষ্টা করেছেন। হয়নি কিছুই। সবই কেমন কৃত্রিম, সাজানো এবং প্রাণহীন, অন্তসারশূন্য। চরিত্রগুলির পারস্পরিক কোনো যোগসূত্রই তৈরি হয় না। আবার এরই মধ্যে রবিঠাকুরের গান ব্যবহার করে ‘আধুনিক’ হওয়ার চেষ্টা নিতান্তই হাস্যকর লাগে।
এমন অগোছালো জলছবিতে রাহুল, দেবলীনা কুমার, মৌবনি, শ্রীলা মজুমদার, অভিষেক থেকে নতুন মুখ শুভম, প্রত্যেক অভিনেতাই যেন মানানসই হওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন। প্রয়াত কিংবদন্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শুধু বেমানান লাগেনি। সিনেম্যাটোগ্রাফার বাদল সরকার আবার দিঘায় ডে ফর নাইট’-এর শুটিং করতে গিয়ে একটা প্রকাণ্ড নকল সূর্যের চাঁদোয়া সাজিয়ে কী যে করতে চেয়েছিলেন দু-তিন জায়গায়? বোঝা গেল না।