সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিডের (COVID-19) দ্বিতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালের শয্যা বা অক্সিজেনের আবেদনে ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। এর মধ্যে হালফিলে যোগ হয়েছে নতুন আরেকটি চাহিদা। তা হল, মাতৃদুগ্ধের (Breast Milk)। করোনা আক্রান্ত হয়ে যত বেশি অন্তঃসত্ত্বা মহিলা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তত জোরালো হচ্ছে মাতৃদুগ্ধ দানের আবেদন। টলিউডের অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ও (Swastika Mukherjee) দিন দু’য়েক আগে জনৈক আক্রান্তের তরফে নিজের ইনস্টাগ্রাম পেজে এমন আবেদন করেছেন।
সন্তানসম্ভবা’রা আইসিইউতে ভরতি হলে বা করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে মাতৃদুগ্ধের চাহিদা তৈরি হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা দরকার পড়ছে সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের জন্য। কোনও ক্ষেত্রে স্তন্যপান করানো মায়েদের সাহায্যও চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এতে নবজাতকের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই এরকম করা নিরাপদ নয়। তবে একই পরিবারে যদি দু’জন স্তন্যপান করানো মা থাকেন এবং দু’জনেরই কোভিড পরীক্ষা করানো হয়ে থাকে, তা হলে এরকম করা যেতে পারে। তবে অন্য কোনও বিকল্প হাতে না থাকলেই এই রাস্তায় হাঁটতে বলছেন চিকিৎসকরা। শিশুটি যদি নির্ধারিত সময়ে ভূমিষ্ঠ হয় অথচ তার মা স্তন্যপান করানোর অবস্থায় না থাকে, তা হলে তাকে সহজেই ফর্মুলা ফিড দেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হলেই ডোনার দুধের দরকার পড়ে।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের পাঠানো ভেন্টিলেটর ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে তো? দ্রুত অডিটের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর]
লকডাউনের জন্য দেশের মিল্ক ব্যাংকে মাতৃদুগ্ধের জোগান কম। সংক্রমণের ভয়েও অনেক মা দুগ্ধদান করতে চাইছেন না। যদিও চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করছেন যে, মাতৃদুগ্ধ এমনভাবে বের করা হয় যাতে মায়ের সংক্রমণের কোনও আশঙ্কা থাকে না। এমনকী, চিকিৎসকরা এমনও বলেছেন, কোভিড আক্রান্ত মা তাঁর শিশুকে স্তন্যপান করাতে পারেন। কারণ এর মাধ্যমে নবজাতকের সংক্রমণের ঝুঁকি প্রায় নেই। তবে স্তন্যপান করানোর আগে হাত ধোয়া এবং মাস্ক পরা অত্যাবশ্যক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও জানিয়েছে, কোভিড আক্রান্ত মায়েরা শিশুকে স্তন্যপান করাতে পারেন। কারণ, কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকির তুলনায় নবজাতককে অনেক বেশি সুবিধা দেয় মাতৃদুগ্ধ পান। দিল্লির রোজওয়াক হসপিটালের গায়নোকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডক্টর শেলি সিং বলছেন, “কোভিড বা অন্য কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তবেই আমরা ডোনার মিল্কের পরামর্শ দিই। কোভিড আক্রান্ত মা যদি স্তন্যপান করানোর অবস্থায় থাকেন, তখনও আমরা ডোনার মিল্কের পরামর্শ দিই না। প্রিম্যাচিওর শিশুদের ওষুধ হিসাবে ডোনার মিল্ক দেওয়া হয়, তাও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।”