রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: তেমন রাখঢাক ছিল না কখনওই। তাই দলবদলটাও আড়ালে-আবডালে হল না। এগরায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সভাতেই বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন কাঁথির বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। ঠিক মাস তিনেক আগে, ১৯ ডিসেম্বর এই অমিত শাহর থেকে পতাকা নিয়েই দলবদল করেছিলেন ছেলে শুভেন্দু অধিকারী। বঙ্গে ভোটগ্রহণ পর্বের ঠিক আগেই বাবাও হাঁটলেন একই পথে। তৃণমূলের ‘বঞ্চনা’ থেকে মুক্তি পেতে তিনি নাম লেখালেন গেরুয়া শিবিরে।
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরির পথটা দেখিয়েছিলেন ছেলে। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী গত নভেম্বরেই মন্ত্রিত্ব, দলের বিধায়ক পদ-সহ যাবতীয় দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। আর ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূলের সঙ্গে শেষ সম্পর্কটুকুও ত্যাগ করে চলে যান পদ্মশিবিরে। ধাপে ধাপে ঠিক এই একই পথে হেঁটেছেন তাঁর বাবাও। প্রথমে ছেলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তার পরপরই তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের নানা দায়িত্ব থেকে সরানো হয় বয়সের কারণ দেখিয়ে। এই মুহূর্তে শিশিরবাবুর বয়স ৮৪ পেরিয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আশি ঊর্ধ্ব কাউকে দলের খুব একটা বড় কাজের দায়িত্ব দিতে চান না। সেই ফর্মুলায় শিশিরবাবুর দায়িত্ব কমানো হয়েছে বলে দাবি ছিল তৃণমূল শিবিরের। যদিও এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে আসল রহস্য বুঝে গিয়েছিলেন শিশিরবাবুর মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিক। বুঝেছিলেন রাজনৈতিক সচেতন মানুষজনও।
[আরও পড়ুন: ‘শুভেন্দু যা বলছে, তাই হবে’, ছেলের উপর আস্থা রেখেই শাহর সভায় রওনা শিশিরের]
এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Elections) নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে লড়াই করবেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রতিদ্বন্দ্বী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা জেনেই শিশিরবাবু ঘোষণা করেছিলেন, নন্দীগ্রামে মমতা নয়, জিতবে শুভেন্দুই। প্রয়োজনে তিনি প্রচার করবেন ছেলের হয়ে। এতেই বোঝা গিয়েছিল, ক্রমশই বিজেপির দিকে ঘেঁষছেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ। রবিবার শাহর সভায় রওনা দেওয়ার সময় রাখঢাক না করেই দলবদলের কথা জানিয়েছেন শিশিরবাবু। অমিত শাহের এগরায় সভায় বক্তব্য রাখলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। বললেন, “বাংলার শিক্ষিত বেকারদের জন্য লড়াই করব। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।”