স্টাফ রিপোর্টার: শরীরের ভিতরে মাদক পাচার নতুন নয়। কিন্তু সম্প্রতি এমন কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে যা দেখে বিস্মিত চিকিৎসককুল। কেউ জরায়ুর মধ্যে মাদক পাচার করছে, তো কেউ মুখগহ্বরে পকেট তৈরি করে মাদক বা দুর্মূল্য রত্ন পাচার (Smuggling) করছে!
দিন পাঁচের আগের ঘটনা, দমদম বিমানবন্দরে এক বিদেশিনির গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর (NCB)। তাঁকে জেরা করে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। জানা যায়, তাইওয়ান থেকে কলকাতায় এসেছেন ওই মহিলা। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে মহিলার যোনির মধ্যে বাইরের কোনও জিনিস রয়েছে। দফায় দফায় জেরা করেও একটি শব্দ বের করা যায়নি। তবে ওই মহিলার মধ্যে যে কিছু একটা রয়েছে তাতে নিঃসংশয় চিকিৎসকরা।
[আরও পড়ুন: বীরভূম থেকেই নিয়ন্ত্রিত হত মুর্শিদাবাদের গরু পাচারচক্র! অনুব্রতকে জেরা করে দাবি সিবিআইয়ের]
শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার সাব্যস্ত হল। নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো এবং রাজ্য পুলিশের কর্মীরা অপারেশন থিয়েটারের বাইরে পাহারায়। অপারেশন টেবিলে তাইওয়ানের (Taiwan) মহিলা। সূত্রের খবর, যোনির ভিতরে রীতিমতো অস্ত্রোপচার করে পকেট তৈরি করা হয়। সেই পকেটের মধ্যে সযত্নে রাখা অতিদুর্মূল্য মাদক। অন্তত তিনটি পাউচ বের করা হয়। বাজার দাম প্রায় কোটি টাকা। একটি করে পাউচ বের হয়েছে, আর চিকিৎসকের সামনে এনসিবি এবং রাজ্য পুলিশ সেগুলি হেফাজতে নিয়েছে! সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অভিমত, এক বিরল ঘটনা। কালেভদ্রে ঘটে। অপারেশন টেবিলে নিয়ে ছোট অস্ত্রোপচার করে মাদক বের করা হয়। বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুদর্শন ঘোষদস্তিদারের কথায়, ‘‘জোর করে মাদক বের করতে গেলে মহিলার শারীরিক সমস্যা বাড়তে পারে। এমনকী প্রাণসংশয়ও হতে পারে। তবে যোনির মুখ ছোট তাই বেশি মাদক রাখা সম্ভব নয়।’’ এসএসকেএম হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়,‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাইওয়ানের মহিলার শরীর থেকে মাদক পাউচ বের করতেই হত। অন্যথায় পাউচ ফেটে যেত।
যোনির ভিতরে যেমন মাদক পাচার হয়েছে, তেমনই গালের ভিতরে অস্ত্রোপচার করে পকেট তৈরি করে রত্ন বা হীরে পাচারের ঘটনাও নজরে এসেছে সরকারি হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকদের। আবার এসএসকেএম হাসপাতালে এক বিদেশির পায়ুদ্বার থেকে কোটি টাকার মাদক উদ্ধারের জন্য নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো এবং রাজ্য পুলিশ টানা তিন দিন বসে আছে। কখন মলত্যাগ করবে আর মাদক বের হবে। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে ডা. মানস গুমটা বলছেন,‘‘মানবদেহের কোনও অঙ্গে অস্ত্রোপচার বা কৃত্রিমভাবে বদলে মাদক বা রত্ন পাচার ফৌজদারি অপরাধ। কড়া শাস্তি হওয়া উচিত এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের।’’