ধীমান রায়, কাটোয়া: একসময় ঘরে ঘরে আলো জুগিয়ে এসেছিল সে। সুগঠিত কাঠামোর মধ্যে কাচের জার। তার মধ্যে জ্বল জ্বল করত আলোর শিখা। নামটা তার ঝড়ের নামেই। হ্যারিকেন। কিন্তু শত ঝড়েও তার শিখা সহজে নেভেনি। রীতিমতো গৃহস্থবাড়ির ভরসা জুগিয়ে এসেছিল বস্তুটি। সেই হ্যারিকেন আজ অতীত। গ্রাম বাংলার বাড়ি বাড়ি খুঁজলেও কদাচিৎ তার দেখা মেলে। তবে সেই পুরানো দিনের সাথী হ্যারিকেন আজ নতুন চেহারায়। এবার সৌরশক্তিচালিত হ্যারিকেন এসে বাজার মাত করছে। তবে চায়না হ্যারিকেন নয়, সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই সৌর হ্যারিকেন। এমনই দাবি বিক্রেতাদের। সৌরশক্তির পাশাপাশি বিদ্যুতেও চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সৌরশক্তিতে চালিত এই হ্যারিকেন এখন মনে পড়াচ্ছে তাদের অগ্রজ কেরোসিন তেলের সেই হ্যারিকেনকে।
[ সাধের বারান্দায় বানিয়ে ফেলুন ফুলের বাগান, রইল টিপস ]
গ্রাম বাংলায় ভোরবেলায় হরিনাম সংকীর্তনের রেওয়াজ আজও রয়েছে। কয়েকজন মিলে খোল করতাল বাজিয়ে ‘রাই জাগো রাই জাগো’ সুর ধরে গ্রামে ঘুরে হরিনাম সংকীর্তন করেন। একে ‘টহল’ বলে। ভোরের অন্ধকারে একসময় হ্যারিকেন সঙ্গে নিয়ে টহল দেওয়া হত। সেই কেরোসিনে জ্বালানো হ্যারিকেন আর নেই। দেখা যায়, ভাতার গ্রামের এমনই এক হরিনামের দল সৌরচালিত হ্যারিকেন নিয়েই টহলে বেড়িয়েছেন। জিজ্ঞাসা করায় তাদের মধ্যে প্রবীণ একজন বলেন, “১০ থেকে ১৫ বছর আগেও কেরোসিনের হ্যারিকেন নিয়ে সংকীর্তনে বেরোতাম। সেই হ্যারিকেন নেই। এখন এই নতুন হ্যারিকেন বাজারে আসার পর পুরানো দিনের কথা মনে পড়ছে। বহন করারও সুবিধা।”
ভাতার বাজারের এক ব্যবসায়ী সুনীল হাজরা বলেন, “আগে আমার দোকানে কেরোসিনের হ্যারিকেন খুব বিক্রি হত। বিক্রি কমে যাওয়ায় ৮ থেকে ৯ বছর আগে থেকেই দোকানে ওই হ্যারিকেন রাখা বন্ধ করে দিয়েছি।” ভাতারের বৈদ্যুতিন সামগ্রী বিক্রেতা নাড়ুগোপাল সামন্ত কাটোয়ার ব্যবসায়ী গৌতম দাসরা বলেন, “একই সঙ্গে সৌরশক্তি ও বিদ্যুতের দ্বারা চার্জ হবে হ্যারিকেন। ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। দাম ২০০ টাকার মধ্যে। গত দু’তিন মাস আগে বাজারে এসেছে। প্রচুর বিক্রিও হচ্ছে।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
[ ঘরোয়া পদ্ধতিতে যত্নে রাখুন কস্টিউম জুয়েলারি ]
The post বাজারে দেদার বিকোচ্ছে সোলার হ্যারিকেন, ফিরছে পুরনো দিনের স্মৃতি appeared first on Sangbad Pratidin.