রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: করোনা আক্রান্ত নন, তবে কোভিড হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। আর তার জেরে মৃতদেহ দুই শ্মশান থেকে ফিরিয়ে দিল শ্মশান লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। বাধ্য হয়ে মৃতের বাড়িতেই মঙ্গলবার দুপুরে দেহ কবর দেওয়া হয়। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর ব্লকের চাপড়েরপার এলাকার। এদিকে ঘটনার পরই এটিকে প্রশাসনিক ব্যর্থতা বলে তোপ দাগে বিজেপি। পালটা তৃণমূল দাবি করে, বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাধাতেই ওই ব্যক্তির দেহ সোমবার দাহ করা যায়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। সেই কারণেই মৃতদেহ পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মৃত ব্যাক্তির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক ১৮ জুন দিল্লি থেকে ফিরেছেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। করোনা সন্দেহে ৩২ বছরের ওই যুবককে ভরতি করা হয় কোভিড হাসপাতালে। অ্যাকটিভ পালমোনারি টিউবারকুলসিসের ওই রোগীর ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন পড়ায় তাঁকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে আরসিপিটিয়ার ও ট্রুনাট দুটোতেই রোগীর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। সোমবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য দপ্তরের অভিযোগ, রোগী নিয়মিত যক্ষ্মা রোগের ওষুধ খেতেন না। আলিপুরদুয়ার জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “মৃত ব্যক্তি কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন না। সেই কারণে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মৃতদেহ সৎকারের সমস্যার বিষয়টি আমাদের দেখার কথা নয়। তাই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
[আরও পড়ুন: ছেলের করোনা, বাড়িওয়ালার বাধায় ঘরে ঢুকতে না পেরে পথেই রাত কাটালেন বৃদ্ধ দম্পতি]
শ্মশান লাগোয়া এলাকার মানুষেরা দাবি তোলেন, মৃত ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত। সেই কারণে ওখানে তাঁরা সৎকার করতে দেবেন না। তারপর আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর ব্লকের চাপড়েরপার এলাকার ওই যুবককে তাঁর গ্রামের শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও বাধা দেন স্থানীয়রা। মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা হয় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের মর্গে। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রামে বৈঠক বসে। সেখানে হাজির ছিলেন প্রশাসনিক কর্তারা ও স্থানীয়রা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় মৃতদেহ ওই ব্যাক্তির বাড়িতেই কবর দেওয়া হবে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে,
আলিপুরদুয়ার দুই নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস বলেন, “বিজেপির বাধাতেই মৃতদেহ সৎকার করা যায়নি। অবশেষে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।” আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “ওই ব্যক্তির কোভিড টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তাছাড়া প্রথা ভেঙে মৃত ব্যক্তিকে বাড়িতেই কবর দেওয়া হল। তাহলে প্রশাসনের ভূমিকা কোথায়?”
[আরও পড়ুন: মেধাবী অমিত জোড়া খুন করে আত্মঘাতী! বিশ্বাসই হচ্ছে না ফুলবাগানের খুনির প্রতিবেশীদের]
The post করোনা রোগী সন্দেহে দেহ দাহতে বাধা, আলিপুরদুয়ারে সৎকার নিয়েও ‘রাজনীতি’ বিজেপির appeared first on Sangbad Pratidin.