ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নব্যেন্দু হাজরা: শেষমুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটা থেকে বেঁচে যেতে পারে বাংলা। তবে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই আগেভাগে রাজ্যের একাধিক জেলার বন্যার সতর্কতা জারি করল রাজ্য প্রশাসন। স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, নদিয়া ও হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। প্রশাসনের তরফে সতর্ক করে জানানো হয়েছে, আগামী দু’দিনের প্রবল বৃষ্টির জেরে এ রাজ্যের একাধিক নদী সুবর্ণরেখা, কংসাবতী, দামোদর, ময়ূরাক্ষী এবং অজয় নদের জলস্তর হঠাৎ বাড়তে পারে। প্রবল বৃষ্টি এবং নদীর জলোচ্ছ্বাসের মাঝেই একাধিক জলাধার জল ছাড়তে পারে। জল ছাড়তে পারে ডিভিসিও। যার জেরে একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কেন্দ্রের জলসম্পদ মন্ত্রকও। তাদের তরফেই এদিন চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যকে সতর্ক থাকতে বলা হয়।
[আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ মোকাবিলায় জেলায়-জেলায় চালু হেল্পলাইন, রইল নম্বরের তালিকা]
এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা জানিয়েছেন, কলকাতায় আমফানের মতো তাণ্ডব চালাবে না ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বা যশ। বরং ২৬ তারিখ দুপুর থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৫ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দমকা হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে যথাক্রমে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার এবং ৮৫ কিলোমিটার। তবে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে অনেকটাই বেশি। ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে হাওয়া। বুধবার সকাল থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে ঘ্ণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে বইবে হাওয়া। সঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে হাওড়া, হুগলি, দুই বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূমে হাওয়ার গতি সর্বাধিক থাকতে পারে ৫০-৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। তবে এই জেলাগুলিতে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা।
সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনেক কর্তা, জেলাশাসক, ব্লকস্তরের আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁদের ডিভিসি এবং সেচবিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় ইয়াস বা যশের প্রভাবে বৃষ্টি শুরুর আগেই নদীর পাড়, চর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।