শেখর চন্দ, আসানসোল: এবার চাকরি দেওয়ার নামে মহিলাদের সঙ্গে প্রতারণা। ঘরে বসে রোজগার করার টোপ দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় কুলটি (Kulti) থানার রামনগর এলাকায়। ওই সংস্থার দুই সদস্যকে হাতের সামনে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। ব্যাপক মারধরের পর একটি ঘরে আটকে রাখা হয় তাদের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে উদ্ধারে কুলটি থানা, নিয়ামতপুর ফাঁড়ি ও সাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশের গাড়ি ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। প্রায় তিন ঘণ্টা অশান্তির পর পুলিশ ওই প্রতারকদের উদ্ধার করতে সমর্থ হয়।
মহিলাদের অভিযোগ, ড্রাই ফুড, মশলা প্যাকিং করে রোজগার করার টোপ দিয়ে ওই সংস্থা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু কাজ কিছু হয়নি। কীভাবে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল প্রতারকরা (Fraudsters)? আদিনাথ গ্রাম উদ্যোগ ও আদি খাদি গ্রাম উদ্যোগ প্রাইভেট লিমিটেড নামে এই দুই সংস্থা মহিলাদের বাড়িতে বসে প্যাকিংয়ের কাজ করার জন্য আসানসোলের বিভিন্ন জায়গা-সহ ঝাড়খণ্ডে আবাসন ভাড়া নিয়ে ১৮টি সেন্টার খোলে। সেখানকার স্থানীয় মহিলাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে ২০ দিন ধরে ট্রেনিং করায়। ওই ট্রেনিংয়ের মধ্যেই বহু ফুড প্যাকিং করিয়ে নেওয়া হয়। প্যাকিংয়ের বিনিময়ে প্রাথমিকভাবে ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। পরে স্থায়ী চাকরি দেওয়ারও কথা। কিন্তু কাজের পর পারিশ্রমিক বা চাকরি কিছুই দেওয়া হয়নি। চিনাকুড়ি, গৌরাণ্ডি, মাইথন, বরাকর এলাকার মহিলারাও ঠিক একইভাবে প্রতারিত হন।
[আরও পড়ুন: কালনায় বাড়ি থেকে উদ্ধার শিক্ষিকার ঝুলন্ত দেহ, মৃতার ছেলের ভূমিকায় রহস্য]
বুধবার রাতে কুলটির মানবেরিয়া এলাকায় সেরকমই ট্রেনিং চলছিল। প্রতারিতরা খবর পেয়ে যান। সেখানে গিয়ে অভিযুক্তদের সামনে পেয়ে টাকা ফেরতের দাবি জানান। তা নিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। অভিযুক্তরা নানা অজুহাত দেখাতে থাকে। ঘন্টার পর ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কেউ টাকা নিয়ে আসে না। ফলে উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের কালঘাম ছুটে যায়। পুলিশের গাড়ি আটকে দেন মহিলারা। প্রায় ঘন্টাতিনেক পর বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিক্ষোভকারীদের হঠিযে অভিযুক্তদের কুলটি থানায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
সংস্থার এক আধিকারিক রবি সালুজা বলেন, “আসানসোল ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ১৮টি সেন্টার চালায় তারা। উদ্দেশ্য গরিব মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা। করোনা পরিস্থিতিতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। মহিলাদের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।”
দেখুন ভিডিও: