সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছেলে করোনায় (Coronavirus) আক্রান্ত হয়ে ভরতি হাসপাতালে। এরই মধ্যে বাবাও আক্রান্ত হলেন মারণ ভাইরাসে। আর এহেন পরিস্থিতিতে অসুস্থ ছেলে নিজের স্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করে বাবাকে ছেড়ে দিলেন নিজের হাসপাতালের বেড! এমনই ঘটনার সাক্ষী হল নয়ডা (Noida)।
ঠিক কী ঘটেছিল? গত ৯ এপ্রিল থেকেই অসুস্থ ছিলেন মায়াঙ্ক প্রতাপ সিং। দিন তিনেকের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করা হয় তাঁর। দেখা যায় তিনি পজিটিভ। ক্রমে শরীর আরও খারাপ হয়ে যায় তাঁর। শেষ পর্যন্ত ১৭ এপ্রিল তাঁকে ভরতি করা হয় নয়ডা কোভিড হাসপাতালে। ততদিনে তাঁর অক্সিজেন লেভেল হু হু করে কমতে শুরু করেছে। প্রথমে জেনারেল ওয়ার্ডে দেওয়া হলেও দ্রুত তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় আইসিইউয়ে।
এরপর যখন মায়াঙ্কের শরীর একটু ভাল, তখনই তিনি খবর পান তাঁর বাবা উদয়প্রতাপ করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। ক্রমশ কমছে অক্সিজেন লেভেল।
[আরও পড়ুন: ‘দিদি-দলীয় কর্মীদের শক্তির কাছে মুখ পুড়ল মোদি-শাহদের’, টুইটে খোঁচা ডেরেকের]
স্বাভাবিক ভাবেই বাবা সম্পর্কে এমন খবর পেয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন মায়াঙ্ক। তাঁর কথায়, ”হাসপাতালে দিন দশেক কাটানোর পরে যখন আমার অক্সিজেন লেভেল একটু স্বাভাবিক, তখন আমাকে জানানো হয় আমার বাবার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে। জানতে পারি, বাবার অবস্থা দ্রুত খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অনেক খুঁজেই কোনও হাসপাতালে জায়গা মেলেনি। আমি ভেবেছিলাম, ঠিক কোনও না কোনও কোভিড হাসপাতালে উনি বেড পেয়ে যাবেন। কিন্তু তা হয়নি। এরপরই এক সিনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে গিয়ে কথা বলি আমি। আমার শরীর খুব দুর্বল। তবে স্থিতিশীল। তাই আমার অনুরোধ মেনে নেন ডাক্তাররা।” এই মুহূর্তে মায়াঙ্ক নিজের বাড়িতে রয়েছেন আইসোলেশনে। আর ২৭ এপ্রিল তাঁর বেডেই জায়গা পেয়েছে তাঁর বাবা। এখনও আইসিইউতে রয়েছেন তিনি।
এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মতো অক্সিজেন কিংবা হাসপাতালের বেডের ঘাটতি রয়েছে নয়ডাতেও। চোখের সামনে তা দেখতেও পেয়েছেন মায়াঙ্ক। জানিয়েছেন, যেভাবে একটি বেডের জন্য মানুষকে হাহাকার করতে দেখা গিয়েছে তা সত্যিই ভয়াবহ। আর সেই কারণেই কোনও ঝুঁকি নেননি তিনি। নিজের শরীরের কথা না ভেবেই বেডটি ছেড়ে দেন বাবাকে।