রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই অর্ন্তকলহে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি। বেসুরে গাইছেন গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতা। এহেন পরিস্থিতিতে ফের শিরোনামে যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। এক বিতর্কিত নিয়োগ নিয়ে দলের অন্দরে তুমুল বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে।
[আরও পড়ুন: ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে আড়াল করছেন BJP MP John Barla! বিস্ফোরক নির্যাতিতা]
দিন দুয়েক আগে মৌমিতা সাহা নামের এক নেত্রীকে রাজ্য সম্পাদক নিয়োগ করেন সৌমিত্র খাঁ। তারপর বুধবার তাঁকে যুব মোর্চার অফিশিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করার নির্দেশ দেন। আর নয়া নম্বর যোগ হতেই দানা বাঁধে বিতর্ক। যুব মোর্চার কর্মীদের একাংশের আক্রমণের মুখে পড়েন তিনি। তীব্র আক্রমণের মুখে সৌমিত্র বিজেপির অফিস সেক্রেটারিকে নির্দেশ দেন যে তাঁকে যেন গ্রুপের অ্যাডমিন করা হয়। আর অ্যাডমিন হয়েই সৌমিত্র তিন জনকে গ্রুপ থেকে বার করে দেন তিনি তাতেও আক্রমণ থামছে না দেখে গ্রুপে পোস্টিং রাইট তিনি এডমিনের জন্য সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন। বুধবার মাঝ রাত পর্যন্ত এই ঝামেলা চলে। সদ্য সংগঠনে আসা, অভিজ্ঞতা নেই এরকম কাউকে সরাসরি রাজ্য সম্পাদক কেন করা হল তা নিয়ে ক্ষোভ যুব মোর্চার রাজ্য নেতাদের বড় অংশের। অভিযোগ, দলের সব রীতিনীতি ভেঙে মঞ্চ থেকে সৌমিত্র ঘোষণা করেছিলেন মৌমিতাকে জেলা থেকে সরাসরি রাজ্য কমিটিতে এনে সম্পাদক পদ দেওয়া হচ্ছে। বিজেপিতে এ ভাবে সাংগঠনিক নিয়োগের ঘোষণা হয় না। এই বিষয়এ যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দাস বলেন, “এই রাজ্য সম্পাদক নিয়োগ নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বও এই বিষয়এ কিছু জানে না। এটা সৌমিত্রবাবুর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।”
উল্লেখ্য, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি পদে সৌমিত্র খাঁ থাকবেন কি না, তা নিয়ে টানাপোড়েন নতুন নয়। চলতি মাসে ৭ তারিখ, বহু জল্পনার পর যুব মোর্চার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন সৌমিত্র খাঁ। তবে তার আগে ফেসবুক (Facebook) লাইভে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে। বলেছিলেন, “বিরোধী দলনেতা নিজেকে বিরাট করে জাহির করছেন। যখন উনি তৃণমূলে ছিলেন, তখনও নিজেকে বিশাল কিছু মনে করতেন। মনে হচ্ছে, দলে শুধু ওঁরই অবদান রয়েছে। আমাদের কোনও ত্যাগ নেই। নতুন নেতা হঠাৎ করে এসে যেভাবে দিল্লির নেতাদের ভুল বোঝাচ্ছেন, তাতে গোটা দল একটা জেলার মধ্যে চলে আসছে।” এসবের জেরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা উসকে ওঠে, তবে কি বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলের পথে পা বাড়াচ্ছেন সৌমিত্র? কিন্তু কয়েকঘণ্টার মধ্যেই তিনি যাবতীয় গুঞ্জন উড়িয়ে জানিয়ে দেন, ইস্তফার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন।