ভারত- ১৮৮/৪ (মণীশ ৭৯ ন:আ:, ধোনি ৫২ ন:আ:)
দক্ষিণ আফ্রিকা- ১৮৯/৪ (ক্লাসেন ৬৯, ডুমিনি ৬৪ ন:আ)
দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে জয়ী
সৌরাশিস লাহিড়ী: মহেন্দ্র সিং ধোনির কথা ভেবে খারাপই লাগছে। এত ভাল একটা ইনিংস খেলল। কঠিন সময়ে টিমকে এত ভাল জায়গায় নিয়ে গেল। আর সে দিনই কি না ভারত জিততে পারল না! সে দিনই কি না যুজবেন্দ্র চাহাল টি-টোয়েন্টিতে ভারতের মোস্ট এক্সপেনসিভ বোলার হয়ে গেল!
জানি, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১৮৮ তুলেও ম্যাচটা হারার জন্য চাহালকে দোষারোপ করা হবে। বুধবার চার ওভারে ৬৪ রান দিয়েছে চাহাল। উইকেটও পায়নি। নিঃসন্দেহে ওর বোলিংয়ের কারণেই ভারত ম্যাচটা হেরেছে। কিন্তু একটা দিন যে কারও খারাপ যেতেই পারে। এই চাহালই তো ওয়ান ডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়ে ছেড়েছে। একটা ম্যাচে মার খেলে কেউ খারাপ বোলার হয়ে যায় না।
তা ছাড়া চাহাল যে বুধবার সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে খুব খারাপ বল করেছে, বলব না। দু’একটা শর্ট করে ফেলেছে। একটা কট অ্যান্ড বোল্ডের চান্সও ছেড়েছে। কিন্তু চার ওভারে ৬৪ দেওয়ার মতো বল করেনি। বরং আর পাঁচটা দিন যে সব ভেরিয়েশন দেয়, সেগুলোই দিয়েছে। ব্যাটসম্যানকে ক্রিজ ছাড়তে দেখলে একটু বাইরে বল করা। বলের গতি হঠাৎ কমিয়ে দেওয়া। কিন্তু হেনরিখ ক্লাসেনের বিরুদ্ধে এ দিন চাহাল জিততে পারল না একটাই কারণে। চাহালের চেয়ে ক্লাসেন একটা স্টেপ এগিয়ে ভাবছিল। যেন আগেভাগে বুঝতে পারছিল, চাহাল কী করবে।
[নয়া নজির গড়ে আইসিসি ব়্যাঙ্কিং শীর্ষে বিরাট, ভাঙলেন শচীনের রেকর্ডও]
মাত্র ৩০ বলে ৬৯ করে গেল ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকা জেপি ডুমিনি ৪০ বলে ৬৪ নটআউট থেকে গেল। টি-টোয়েন্টি সিরিজকে ১-১ করে দিয়ে। ২৪ ফেব্রুয়ারির কেপটাউন টি-টোয়েন্টি এরপর সিরিজ নির্ধারক হয়ে গেল। শুধু খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে, এ দিনই সেটা হয়ে যেতে পারত। ভারত দেড় ওভার বাকি থাকতে ছ’উইকেটে ম্যাচ হারার পরেও বলব ১৮৮ জেতার মতো স্কোর ছিল। আর আমার মতে, জয়টাই ধোনির দুর্ধর্ষ ব্যাটিংয়ের প্রতি সঠিক বিচার হত। হালফিলে কত কী-ই না শুনতে হয়েছে টি-টোয়েন্টির ধোনিকে নিয়। স্ট্রাইক রেট বিশ্রী পড়ে গিয়েছে। ও নাকি এখন টিমের লাগেজ। জানার ইচ্ছে আছে, আজকের পর ধোনির সমালোচকরা কী বলেন।
[বিরুষ্কার এমন ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি এর আগে কখনও দেখেছেন?]
না, ধোনি ভারতীয় ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরার এ দিন নয়। ওটা মণীশ পাণ্ডে। কিন্তু ধোনির ইনিংস এতটাই রোমাঞ্চকর যে, মণীশের ইনিংস নিয়ে ভাবার সময়ই পাওয়া যাচ্ছে না। দেখুন, দশ বছর আগের ধোনিকে আশা করা আর ঠিক নয়। যে কি না দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ব্যাটের মাঝখান দিয়ে হিট করে বলকে বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দেবে। এই ধোনি অভিজ্ঞ ধোনি, যে কি না অপেক্ষা করবে শেষ পর্যন্ত। প্রথমে থিতু হবে। তার পর চালাবে। আর প্রয়োজনে ভিন্টেজ ধোনির নমুনাও পেশ করবে। আজ কভারের উপর দিয়ে ব্যাকফুটে ধোনির ছক্কাটা ভোলা যাবে?
পরিষ্কার বলছি, ধোনির ২৮ বলে ৫২ নটআউটের ইনিংসটা না থাকলে ভারত ১৮৮ তুলতে পারত না। মণীশও অত ভাল খেলতে পারত না। দেখছিলাম, শেষ ওভারেও মণীশকে গাইড করে যাচ্ছিল ধোনি। এমনকী বকাঝকাও করছিল। একটা ভাল টিম তৈরি করতে গেলে টিমে কিন্তু ধোনির মতো এ রকম সিনিয়রের দরকার আছে। যার মগজে একদিকে ম্যাচ নিয়ে ম্যাথস চলবে। অন্য দিকে চলবে, জুনিয়রের থেকে কী করে সেরাটা বার করে আনা যায়, তা ভেবে যাওয়া।
ভারত জিততে পারেনি। কিন্তু মহেন্দ্র সিং ধোনি কিন্তু দেখাল, টিমে ওর প্রয়োজন এখনও বেঁচে আছে। ওয়ান ডে-তে শুধু নয়। টি-টোয়েন্টিতেও।
The post ধোনি-রাজ জলে গেল চাহালের চার ওভারে appeared first on Sangbad Pratidin.