গোকুলাম –২ মহামেডান স্পোর্টিং -১
(রিশাদ, বেনি) (আজহারউদ্দিন)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশালাকায় যুবভারতীর গ্যালারিতে লুটিয়ে পড়ছে টিফো। তাতে লেখা, দেন, নাও, ফরএভার। ইস্টবেঙ্গল (East Bengal), মোহনবাগান (Mohun Bagan) এবং মহামেডান স্পোর্টিংয়ের (Mohammedan Sporting ) বিখ্যাত লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন এবং সাদা-কালো রংয়ের উপস্থিতি সেখানে। তার ঠিক নীচেই লেখা সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল। এই ফুটবলের টানেই তো যুবভারতী ভরিয়েছিলেন এই বঙ্গের ফুটবলপ্রেমীরা।
কিন্তু দিনের শেষে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে আর স্টেডিয়াম ছাড়তে পারলেন কোথায় বাংলার নিখাদ ফুটবলপ্রেমীরা! চা পানের সময়ে ঠোঁট আর কাপের মধ্যে যে সামান্য দূরত্ব থাকে, মহামেডান স্পোর্টিং ও আই লিগ (I league) খেতাবের মধ্যেও সেই একই ব্যবধান থেকেই গেল। ইতিহাসের পাতায় নাম তোলা আর হল না রেড রোডের ধারের ক্লাবের। কাছে এসেও অনেক দূরে মহামেডান স্পোর্টিং।
[আরও পড়ুন: আইপিএল থেকে অবসর ঘোষণা অম্বতি রায়ডুর, লিখেও মুছে ফেললেন টুইট]
কয়েকদিন আগে সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে সাক্ষাৎ হয়েছিল বাংলা ও কেরলের। কেরলের কাছে হেরে গিয়ে সন্তোষ ট্রফি আর জেতা হয়নি বাংলার। এদিনও ছিল বাংলা ও কেরলের ক্লাবের মর্যাদার লড়াই। সেই লড়াইতেও কেরলের ক্লাব গোকুলাম হারিয়ে দিয়ে গেল মহামেডান স্পোর্টিংকে। টানা দু’ বার আই লিগ গেল করলে।
ম্যাচের বল গড়ানোর আগে থেকেই শহরের সব রাজপথ শনিবার এসে মিশেছিল যুবভারতীতে। বহুদিন বাদে যুবভারতীর গ্যালারি আবার পরিপূর্ণ। গ্যালারিতে সুর, জান জান মহামেডান।
সেই সুর, ছন্দ, তাল সব কেটে গেল নব্বই মিনিটের লড়াইয়ে শেষে। দ্বিতীয়ার্ধেই ম্যাচের তিন-তিনটি গোল হল। ৪৯ মিনিটে রিশাদ মহামেডানের জালে বল জড়ান। নিজেদের অর্ধ থেকে মসৃণ এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে এগিয়ে যায় গোকুলাম কেরল। রিশাদের শট শরীর ছুড়েও নাগাল পেলেন না মহামেডানের খর্বকায় গোলকিপার জোথানমাইয়া। প্রথমার্ধে তিনিই উন্মাদের মতো গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিপন্ন করেছিলেন দলকে। ভাগ্য ভাল, তাই গোলকুলামের ফ্লেচার সেই যাত্রায় শটটা গোলে রাখতে পারেননি। কিন্তু বিরতির পরই লকগেট খুলে ফেলে গোকুলাম। মহামেডান অবশ্য ম্যাচে ফিরে আসে রিশাদ গোল করার আট মিনিট পরেই।
পরিবর্ত হিসেবে মহামেডান কোচ চেরনিশভ মাঠে নামান আজহারউদ্দিন মল্লিককে। ডার্বিতে এই আজহারউদ্দিন ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়ানো প্রায় নিয়ম করে ফেলেছিলেন। এদিনও তিনি নেমেই আদায় করে নেন ফ্রি কিক। গোলটিও তাঁর নামেই। মার্কাস জোসেফ ফ্রি কিকটি নেন। তাঁর পায়ের দিকেই তাকিয়ে ছিল মহামেডান। আই লিগের ‘ফাইনাল’-এর আগেই ১৫টি গোল হয়ে গিয়েছিল ত্রিনিদাদ-টোব্যাগোর এই স্ট্রাইকারের। এদিন তাঁর বাঁ পায়ে নেওয়া ফ্রি কিক আজহারউদ্দিনের শরীরে লেগে গোকুলামের জালে বল জড়িয়ে যায়। এর ঠিক চার মিনিট পরেই ফের এগিয়ে যায় গোকুলাম। দ্বিতীয় গোলটি প্রথম গোলেরই অ্যাকশন রিপ্লে। গোকুলামের মসৃণ আক্রমণের জবাব ছিল না মহামেডানের কাছে। এমিল বেনির গড়ানে শট বাঁচাতে পারেননি জোথানমাইয়া।
তার পরেও অবশ্য ফিরে আসার সুযোগ ছিল মহামেডানের। কিন্তু দিনটা যে ছিল না সাদা-কালো শিবিরের। তৈরিও হল না ইতিহাস। ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে রইলেন মার্কাস জোসেফ।