ইংল্যান্ড -২ নেদারল্যান্ডস-১
(হ্যারি কেন-পেনাল্টি, ওয়াটকিন্স) (সিমন্স)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খেলার বয়স তখন প্রায় ৯০ মিনিট। রেফারির বাঁশি বাজল বলে। অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ গড়াচ্ছে, এমনটা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন দুদলের কোচ। ঠিক তখনই কাহানি মে টুইস্ট।
পরিবর্ত হিসেবে নামা ওলি ওয়াটকিন্সের দুর্দান্ত ফিনিশে ইংল্যান্ড পেয়ে গেল ইউরো (Euro Cup 2024) ফাইনালের টিকিট। নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে গোল করে নায়ক বনে গেলেন অ্যাস্টন ভিলার এই স্ট্রাইকার। ওয়াটকিন্সের গোলেই ইংল্যান্ড ২-১-এ নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ইউরোর ফাইনালে পৌঁছে গেল। ফাইনালে ইংল্যান্ডের জন্য অপেক্ষা করছে স্পেন।
[আরও পড়ুন: ‘তুমি আমাদের গর্বিত করেছ’, বিশ্বজয়ী সিরাজকে উপহারে মুড়ে দিল তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সরকার]
নেদারল্যান্ডসের স্বপ্ন শেষ। স্বপ্ন ভাঙল কমলা ব্রিগেডের কোচ রোনাল্ড কোম্যানেরও। ১৯৮৮ সালে ইউরোপসেরা হয়েছিল ডাচরা। সেই চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন বর্তমান ডাচ কোচ। খেলোয়াড় হিসেবে ইউরো জেতার পাশাপাশি কোচ হিসেবেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি ছিল তাঁর সামনে। কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ায় কোম্যানকে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরানোর পরে হ্যারি কেন।
ইংল্যান্ড ম্যানেজার সাউথগেটের সামনে প্রায়শ্চিত্তের আরও একটা সুযোগ রয়েছে। গতবার ফাইনালে ইটালির কাছে হেরে যাওয়ায় কাপ যায়নি বিলেতে। এবার আরও একটা সুযোগ পাচ্ছেন সাউথগেট। কী হবে, তার উত্তর দেবে সময়।
এদিন অবশ্য শুরুতেই এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। দর্শকরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই কামান দাগেন নেদারল্যান্ডসের সিমন্স। ইংল্যান্ডের ডেকলান রাইসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে সিমন্সের বুলেট গতির শট আছড়ে পড়ে ইংল্যান্ডের জালে। সেই শট থামানোর উপায় ছিল না ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডের। খেলা তখন সবে ৭ মিনিট গড়িয়েছে। গোল হজম করে সমতা ফেরায় ইংল্যান্ড।
সেমিফাইনালের আগে পর্যন্ত সাউথগেটের ছেলেদের খেলা সমালোচিত হয়েছে। শেষ চারের পাসপোর্ট জোগাড় করলেও ফোডেনদের খেলা কিন্তু আমজনতার হৃদয় জিততে পারেনি। ডাচদের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড অন্য অবতারে ধরা দিল। নিজেদের মধ্যে অনেক পাস খেলে নেদারল্যান্ডসের উপরে চাপ তৈরি করছিলেন সাউথগেটের ছেলেরা।
ফিল ফোডেন ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। একবার তাঁর বাঁ পায়ের বাঁক খাওয়ানো শট নেদারল্যান্ডসের পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ক্ষণিকের জন্য স্পেনের ইয়ামালকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ফোডেন। আরেকবার গোললাইন থেকে তাঁর শট বাঁচান ডেনজেল ডামফ্রিস। সেই ডেনজেলই বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন হ্যারি কেনকে। ভার প্রযুক্তি যাচাই করে পেনাল্টি দেন রেফারি। যদিও পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক থাকছে। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি হ্যারি কেন। ডামফ্রিস প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কর্নার থেকে তাঁর নেওয়া হেড বারে লেগে বেরিয়ে যায়।
ওয়াটকিন্সের গোলের সেই মুহূর্ত। এই গোলই টানা দ্বিতীয়বার ইউরোর ফাইনালে পৌঁছে দিল ইংল্যান্ডকে।
দ্বিতীয়ার্ধে দুদল এতটাই সতর্ক হয়ে পড়ে যে গতি হারায় খেলা। বল নিজেদের দখলে রাখলেও অ্যাটাকিং থার্ডে পৌঁছে কামড় বসাতে পারছিল না ইংল্যান্ড। এর জন্য অবশ্য ডাচদেরই কৃতিত্ব দিতে হবে। উল্টোদিকে সিমন্স-ডাইকরা দ্রুতগতিতে কাউন্টার অ্যাটাকের উপরে জোর দিয়েছিলেন। ৬৫ মিনিটে ভার্জিল ডাইকের শট অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় বাঁচান ইংল্যান্ড গোলকিপার। এর পরে দুদল একে অপরের পরীক্ষা নেয়। গোলের সুযোগও তৈরি হয়। কিন্তু ঠোঁট আর পেয়ালার মধ্যে দূরত্ব থেকেই যায়। ৯০ মিনিটে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। পালমারের কাছ থেকে বল পেয়ে ওয়াটকিন্সের দুর্দান্ত ফিনিশ। তাঁর পা-ই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।
[আরও পড়ুন: নাকচ গম্ভীরের আর্জি, টিম ইন্ডিয়ার বোলিং কোচ হওয়ার দৌড়ে প্রাক্তন বাঁহাতি পেসার]