শিলাজিৎ সরকার: ভারতীয় ফুটবলে তাঁর আদর্শের নাম গুরপ্রীত সিং সান্ধু। ২৪ ঘণ্টা আগেই বেঙ্গালুরু এফসি ফাইনালে উঠেছে সেই গুরপ্রীতের হাতযশে ভর করে। লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসিকে হারিয়েছে বেঙ্গালুরু। গ্রেগ স্টুয়ার্টের পেনাল্টি এবং শুটআউটে মেহতাব সিংয়ের শট আটকে জয়ের নায়ক সেই গুরপ্রীত। সেই আদর্শের পথ ধরেই সোমবারের যুবভারতীতে নায়ক হলেন তিনি, বিশাল কাইথ।
সিমলার কাছে এক গ্রাম থেকে উঠে আসা এই গোলকিপারের বিশ্বস্ত হাতে ভর করেই ফাইনালে উঠল মোহনবাগান। ম্যাচে কয়েকটা নিশ্চিত সেভ করার পাশাপাশি টাইব্রেকারে আটকে দিলেন জেভিয়ার সিভেরিওর শট। সেটাই যেন শুটআউটে মানসিকভাবে পিছিয়ে দিল হায়দরাবাদ এফসিকে (Hyderabad FC)। বিশালের এই পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত মোহনবাগানের (Mohun Bagan) গোলকিপার কোচ পিন্দাদো। বলে গেলেন, “বিশাল পরিশ্রমী ছেলে। অনুশীলনে যা বলি সেই অনুযায়ী কাজ করে।”
[আরও পড়ুন: নাতু নাতু গানে নাচ গাভাসকরের, রিল জাদেজা-অশ্বিনের, অস্কার জয় উদযাপনে ব্যস্ত ক্রিকেটাররা]
আর বিশাল নিজে? টাইব্রেকারে প্রতিপক্ষের শট অনায়াস ভঙ্গিতে ঠেকানো নিয়ে নিজে কী বলছেন বাগানের শেষ প্রহরী? বিশাল নিজের পারফরম্যান্সের পুরো কৃতিত্বটাই দিলেন গোলকিপার কোচ পিন্দাদোকে। বলে গেলেন, “শুটআউটের ঠিক আগে গোলকিপার কোচের সঙ্গে কথা বলেছি। কোচ হায়দরবাদারে ফুটবলারদের নিয়ে যাবতীয় তথ্য আমাকে দিয়েছেন। কে কোন দিকে শট মারতে পারে, তা কোচ আগেই আমাকে বুঝিয়ে বলেছিলেন। আমি শুটআউটে সেই অনুযায়ী কাজ করেছি। তাতেই সাফল্য এসেছে।” প্রথম পর্বে হায়দরাবাদ থেকে মোহনবাগানের গোল না খেয়ে ফেরার পিছনে অন্যতম কারণ ছিলেন বিশাল। সোমবারও কঠিন পরিস্থিতিতে নিজের উপর আস্থা হারাননি তিনি। শুধু শুটআউটে সিভেরিওর শট ঠেকানোই নয়, ম্যাচেও কয়েকবার মোহনবাগানের পতন ঠেকিয়েছেন হিমাচলের এই গোলকিপার। এমনকী অতিরিক্ত সময়ের শেষদিকে একটা গোললাইন সেভও করেছেন তিনি।
সেমিফাইনালের লড়াইয়ে নামার আগেই লিগের সেরা কিপার হিসাবে গোল্ডেন গ্লাভস পেয়েছেন বিশাল। আর শেষ চারে ফের বোঝালেন, যোগ্য লোকের হাতেই উঠেছে সেই পুরস্কার। মোহনবাগান ডিফেন্ডার স্লাভকো ডামজানোভিচও বলে গেলেন, “বিশাল অসাধারণ!” বিশাল অবশ্য নিজের নয়, শুনিয়ে গেলেন দলের কথাই। বললেন, “আমাদের এই সাফল্য কারও একক কৃতিত্ব নয়, দলগত প্রচেষ্টার ফসল।” এবার ফাইনালে বিশালের প্রতিপক্ষ বেঙ্গালুরু, যে দলে খেলেন তাঁর আদর্শ গুরপ্রীত। সেই ম্যাচও যদি টাইব্রেকারে গড়ায়, তবে কে বাজিমাত করবেন? বিশাল? নাকি গুরপ্রীত? ১৮ মার্চই পরিষ্কার হয়ে যাবে সেকথা।