সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্পেনের কোপা দেল রে'র ফাইনালের আর কয়েক ঘণ্টা বাকি। ফুটবল সমর্থকদের জন্য অপেক্ষায় আরও একটা এল ক্লাসিকো। তার আগে দুই মেরুতে দুই দল। বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে, লা লিগার শীর্ষে। ত্রিমুকুট জয় নিয়ে আশাবাদী 'কুলার্স'রা। অন্যদিকে রিয়াল মাদ্রিদের অবস্থা ছন্নছাড়া। চোট-আঘাতের সমস্যা, কোচ আন্সেলোত্তির মাথায় ছাঁটাইয়ের ভয়। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ের থেকেও তারা বেশি জেরবার মাঠের বাইরের পরিস্থিতি। এল ক্লাসিকোর একদিন আগে শোনা গেল রেফারির কান্না, ম্যাচ বয়কটের গুঞ্জন, লা লিগা কর্তৃপক্ষের জুড়ে যাওয়া এবং সবশেষে রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া যে, হ্যাঁ, আমরা ফাইনাল খেলব।
ঘটনার সূত্রপাত রিয়াল মাদ্রিদ টিভি'র একটি ভিডিও থেকে। এই ম্যাচের যিনি দায়িত্বে আছেন, সেই রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়াকে নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে রিকার্দোর রেফারিং কেরিয়ারের একাধিক ভুল তুলে ধরা হয়। এল ক্লাসিকোর ঠিক আগে রেফারিকে নিয়ে এই ধরনের ভিডিও পোস্ট বেশ আশ্চর্যের বটে। কিন্তু এবার বেনজির এক কাণ্ড ঘটালেন রিকার্দোও। শুক্রবার আচমকা তিনি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন। সঙ্গে এই ম্যাচে ভিএআর-এর দায়িত্বে থাকা পাবলো গঞ্জালেজ ফুয়েন্তেস।
সেখানে একরাশ অভিযোগ উগড়ে দেন রিকার্দো। তাঁর বক্তব্য, রিয়ালের ওই ভিডিওর জন্য তাঁর সন্তানকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, "যখন আপনার ছেলে স্কুল থেকে ফিরে এসে বলে, সবাই তাঁর বাবাকে 'চোর' বলছে, তখন ব্যাপারটা মেনে নেওয়া কঠিন। ওদের কোনও অধিকার নেই, এই ধরনের ভিডিও পোস্ট করার। এটা চূড়ান্ত অপেশাদারিত্ব।" তারপরই আচমকা কান্নায় ভেঙে পড়েন রিকার্দো। ক্ষোভ উগড়ে দেন ভিএআরের দায়িত্বে থাকা পাবলো। তিনি বলেন, "রিয়ালের বোঝা উচিত, এই ধরনের ভিডিওর কী প্রভাব পড়তে পারে।"
স্বাভাবিক ভাবেই এই 'কান্নাকাটি' ভালো চোখে নেয়নি রিয়ালও। ম্যাচের দুদিন আগে রেফারির এই সাংবাদিক সম্মেলন তাদের বিপক্ষে যেতে পারে বলেই বক্তব্য। তারাও পালটা দেয়, 'ফাইনালের আগে অংশগ্রহণকারী একটা দলের বিরুদ্ধে স্পষ্টতই বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে।' পালটা তারাও সাংবাদিক সম্মেলন বয়কট করে। ম্যাচের আগে ক্লাব সভাপতিদের জন্য আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেননি রিয়ালের 'সর্বেসর্বা' ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ।
মাদ্রিদের থেকে ক্রমাগত দাবি করা হয়, স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন যেন এই রেফারির বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়। জবাবে লা লিগার প্রধান জাভিয়ের তেবাস এক্স হ্যান্ডলে পেরেজকে ব্যক্তিগত আক্রমণ শুরু করেন। সেই রেশ মিটতে না মিটতেই ছড়িয়ে যায়, যদি রেফারি না বদলানো হয়, তাহলে মাদ্রিদ ফাইনালে অংশগ্রহণ করবে না। অবশ্য লস ব্ল্যাঙ্কোসরা সরে গেলেই বার্সেলোনা সরাসরি ট্রফি পাবে না। সেমিতে রিয়ালের প্রতিপক্ষ সোসিয়াদাদের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলতে হবে তাদের। কিন্তু টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়ালে রিয়ালের সম্মান বিরাট ধাক্কা খাবে।
যদিও এই দাবি যে নিতান্তই গুজব, সেটা পরে পরিষ্কার করে দেয় রিয়াল। জানিয়ে দেওয়া হয়, এই 'বিদ্বেষ'এর বিরুদ্ধে তারা মাঠে নামবে, সে রেফারি যাই থাকুক না কেন। ফাইনাল বয়কট করার কোনও প্রশ্নই নেই। ফলে ভারতীয় সময় রাত দেড়টায় রিয়াল নামবে ঠিকই। কিন্তু ঘরে-বাইরে প্রবল চাপ নিয়েই নামবে।