shono
Advertisement

পনেরো বছর পরে জাপানের মতো বিশ্বকাপে খেলতে পারে ভারতও! মত মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের

সঠিক পরিকল্পনার ফলেই আজ বিশ্বকাপে দাপট এশীয় দেশগুলির।
Posted: 09:27 AM Nov 25, 2022Updated: 09:27 AM Nov 25, 2022

মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: সত্যি আজ আমি গর্বিত। একজন এশিয়ার নাগরিক হিসেবে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এতদিন বিশ্ব ফুটবল বলতে আমরা দেখে এসেছি ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার দাপট। এবারও তার হয়তো ব্যতিক্রম ঘটবে না। তবে এশিয়ার দেশগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে, ‘আমরা তো আর ছোট নই, আর ছোট নই’। এশিয়ার ছ’টা দেশ এবার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup) খেলছে। সংগঠনের দায়িত্ব পাওয়ায় খেলার সুযোগ পেয়েছে কাতার। তাই কাতার সম্পর্কে খুব একটা আগ্রহ নেই। কিন্তু বাকি পাঁচটা দেশের খেলা দেখেছি। তারমধ্যে দু’টো দেশ জিতেছে। দু’টো দেশ হেরেছে। আজ দক্ষিণ কোরিয়া উরুগুয়ের সঙ্গে ড্র করল। তার মানে তিনটে দেশ প্রথম ম্যাচে অপরাজেয় থাকল কাতার বিশ্বকাপে। এরচেয়ে বড় পাওনা আর কী থাকতে পারে।

Advertisement

সৌদি হারিয়েছে আর্জেন্টিনাকে (Argentina vs Saudi Arabia)। জার্মানির বিপক্ষে জিতেছে জাপান (Germany vs Japan)। বৃহস্পতিবার কোরিয়াও জিতে গেলে অবাক হতাম না। মানছি উরুগুয়ের দু’টো শট পোস্টে লেগেছে। আবার এও ভাবুন, কোরিয়ানরা সহজ সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেনি। এইসব তথ্য বুঝিয়ে দিচ্ছে, এশিয়ানরা বিশ্বের কোনও দলকে আর ভয় পাচ্ছে না। বুক চিতিয়ে লড়াই করার মতো মানসিকতা তৈরি করে ফেলেছে। বিশ্বকাপ পাওয়ার দাবিদার যারা তারা বুঝে গিয়েছে, এশিয়ার দেশগুলোকে বলে বলে আর সহজে হারানো যাবে না। এতদিন এশিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলোকে হারিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তা তারা তৈরি করে ফেলত। এখন আর তা হচ্ছে না। অনেকে আজ হয়তো অঘটন বলছেন। কিন্তু আগামী বা পরের দু’টো বিশ্বকাপে দেখবেন এশিয়ার দেশগুলো ইউরোপ বা লাতিন আমেরিকা দলগুলোর ঘুম কেড়ে নেবে।

[আরও পড়ুন: সার্বিয়া ম্যাচে চোট নেইমারের, বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন ব্রাজিল তারকা?]

অনেকে হয়তো বলবেন, কাতারে খেলা হচ্ছে বলে এশিয়ার দেশগুলোর সুবিধে হয়েছে। তাহলে গত রাশিয়া বিশ্বকাপের দিকে তাকান। জাপানের গ্রুপে ছিল কলম্বিয়া, পোল্যান্ড ও ক্যামেরুন। আমার ধারণা ছিল জাপান গ্রুপ লিগের সবচেয়ে তলানিতে থাকা দল হবে। অথচ কী দেখলাম? প্রথম ম্যাচে কলম্বিয়াকে হারিয়ে দিল জাপান। তারপর ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে জিতল। শুধুমাত্র হেরে গিয়েছিল পোল্যান্ডের কাছে। কোরিয়া গতবার হারিয়ে ছিল জার্মানিকে। এইসব রেজাল্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে কাতারে খেলা হচ্ছে বলে এই দলগুলো সুবিধে পাচ্ছে তা কিন্তু নয়।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠবে, ভারত তাহলে পারছে না কেন? একসময় আমরা জাপান, কোরিয়াকে হারানোর দৌড়ে থাকতাম। আজ তারা কোথায় আর আমরা কোথায়। দেখুন ফুটবলে রাতারাতি উন্নতি করা সম্ভব নয়। ভাল কিছু করতে হলে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। জাপানের পরিকাঠামো সম্পর্কে আমার কিছুটা ধারণা আছে। কোরিয়ানরাও সেই পথ ধরে এগোচ্ছে। গত বিশ্বকাপে এশিয়া থেকে যে চারটে দেশ রাশিয়া গিয়েছিল এবার তারাই আছে। তার মানে এই দেশগুলো পরিকল্পনা করে এগোচ্ছে। আমাদের না আছে উন্নত পরিকাঠামো, না আছে সঠিক ভাবনা চিন্তা। আজ থেকে ৭-৮ বছরের ছেলেদের নিয়ে প্ল্যান করলে আগামী দশ-বারো বছর পরে তার একটা ফসল পাবেন। তাই ভারত যে তিমিরে রয়েছে সেই তিমিরেই থেকে যাবে।

আসলে আমাদের ভাবনার স্তর এতটাই নিম্নমুখী যে ভাল কিছু আশা করা সত্যি অন্যায়। শারীরিক দিক দিয়ে আমরা যে খুব একটা পিছিয়ে আছি তাতো নয়। কোরিয়ান বা জাপানিদের চেহারা এমন কিছু নয় যে তারা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। কিছু কিছু ফুটবলার হয়তো ভাল মানের চেহারা সম্পন্ন। কিন্তু দলের গড় চেহারা যদি দেখেন তাহলে বুঝবেন, ভারতীয়রা সেখানে খুব একটা পিছিয়ে নেই। সুতরাং চেহারাতে আমরা পিছিয়ে থাকছি না। একজন প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে বলতে পারি, আশায় বাঁচে চাষার মতো আমিও চাইব, ভারত বিশ্বকাপ খেলছে দিনটা যেন দেখে যেতে পারি। মনে হয় না এই জীবনে তা সম্ভব হবে। পরজন্ম বলে যদি কিছু থাকে তখন না হয় দেখতে বসব। মেতে উঠব আনন্দে।

[আরও পড়ুন:কাতারে শুরু সাম্বা নাচ, রিচার্লিসনের জোড়া গোলে সার্বিয়াকে উড়িয়ে দিল ব্রাজিল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement