সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর কাছে জাতীয় দলে কামব্যাক করার সুযোগ ছিল। কিন্তু ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত অসুস্থ বাবা লোকেন্দ্র সিং চাহারের কাছে থাকার জন্য, তাঁর দেখভাল করার জন্য, গত দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন দীপক চাহার (Deepak Chahar)। টিম ইন্ডিয়ার (Team India) জার্সি গায়ে তোলার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করলেও, দীপক একেবারেই অনুতপ্ত নন। বরং যোগ্য সন্তানের মতো তাঁর বক্তব্য, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার বাবার চিকিৎসা করানোই তাঁর সবচেয়ে বড় কর্তব্য। সেটাই পালন করেছেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দীপক বলেছেন, “আমার কাছে বাবা সবকিছু। ওঁর জন্যই তো পরিচিতি পেয়েছি। কয়েকজন লোক চিনতে পেরেছে। এহেন অসুস্থ বাবার পাশে না থাকলে, আমি কেমন সন্তান হলাম? বাবা খুবই অসুস্থ ছিলেন। আর তাঁর জন্য ক্রিকেটও ছাড়তে পারতাম!”
[আরও পড়ুন: বিরাটের ওয়ার্ক এথিক্সের প্রশংসা করে কাদের দিকে আঙুল তুলে দিলেন রোহিত?]
চোট সারিয়ে বিশ্বকাপের পর দলে ফিরেছিলেন। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ ম্যাচে তাঁকে শেষবার খেলতে দেখা গিয়েছিল। এর পরেই তাঁর কাছে চলে এসেছিল দক্ষিণ সফরে উড়ে যাওয়ার সুযোগ। তবে তিনি পরিবারের কথা ভেবে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছিলেন। দীপক ফের যোগ করেন, “দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজটা ঘরের মাঠে হলে আমি তবুও খেলার চেষ্টা করতাম। কারণ বাবা আরও গুরুতর অসুস্থ হলে ৪-৫ ঘন্টার ব্যবধানে এক শহর থেকে আর এক শহরে চলে যেতে পারতাম। কিন্তু দলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে গেলে তো এত সহজে বাবার কাছে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব ছিল না। দেশে ফিরতে অন্তত ২-৩ দিন লেগে যেত। সেই সময় ঝুঁকি নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর তাই বাবার কাছে থেকে গেলাম। এটাই সেই মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।”
বাবা ও পরিবারের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু নতুন বছরে ঘরের মাঠে আয়োজিত হওয়া আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি কেন খেললেন না? সেই সিরিজে ভালো পারফর্ম করতে পারলে আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ার পথ অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যেত। যদিও দীপক বলেন, “আমার বাবা ২৫ দিন আলিগড়ের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এবং সেই কারণে পুরো পরিবার আগ্রা থেকে আলিগড়ে চলে এসেছিল। আমি সারাদিন হাসপাতালে থাকতাম। মাঝেমধ্যে সময় পেলে ব্যায়াম করতাম। প্রায় একমাস বোলিং অনুশীলন করার সুযোগই পাইনি। তাহলে কীভাবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলব!”
দীপক ও তাঁর পরিবার এই লড়াই জিতেছেন। পুরো সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এসেছেন ওঁর বাবা। এর পর গত কয়েক সপ্তাহ বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাব করেছেন দীপক। এই মুহূর্তে তাঁর কাছে পারফর্ম করার মঞ্চ হল রনজি ট্রফি ও আইপিএল। এই দুটি প্রতিযোগিতায় পারফর্ম করে দীপক টি-২০ বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাবেন কিনা সেটাই দেখার।