সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রিমিয়ার এ ডিভিশনের পর কলকাতা লিগের (CFL) অন্যান্য ডিভিশনেও এবছর বন্ধ থাকছে অবনমন (Relegation)। বৃহস্পতিবার গভর্নিং বডির সভায় সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিন প্রধান পুরো লিগ না খেলায় এবছর প্রিমিয়ার এ-তে অবনমন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আইএফএ-র গভর্নিং বডি। তারপর অন্যান্য ডিভিশনের ক্লাবগুলিও অবনমন বন্ধ রাখার দাবি সরব হয়।
এদিন বৈঠকে গভর্নিং বডির সদস্যরাও অবনমন বন্ধ রাখার প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন। এই অবস্থায় কিছু সদস্য রেলিগেশন রাউন্ডের ম্যাচ বাতিলের দাবি জানান। যা নিয়ে আইএফএ কর্তারা জানিয়েছেন, ক্লাবগুলি চিঠি দিলে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। তবে প্রোমশন বন্ধ না হওয়ায় চ্যাম্পিয়নশিপ রাউন্ডের ম্যাচগুলি হবে। পাশাপাশি সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির আচার্য সত্যম রায়চৌধুরিকে আইএফএ-র ‘পেট্রন’ পদে বসার প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রেও সম্মতি জানান সদস্যরা।
[আরও পড়ুন: এগিয়ে আসছে ISL, মেগা টুর্নামেন্টের জন্য জার্সি উন্মোচন করল ইস্টবেঙ্গল]
তবে এদিন ফের আইএফএ-র (IFA) অন্তর্দ্বন্দ্বের ছবি ফের প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বিশেষত পেট্রন ইস্যুতে চিঠি দিয়ে বিরোধিতা করায় আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্তের তোপের মুখে পড়েন সহসচিব নজরুল ইসলাম। চেয়ারম্যান বলেন, “স্পনসর ঘোষণার অনুষ্ঠানে আমি সত্যমবাবুকে পেট্রন করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা বলেছিলাম। সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে নজরুল চিঠি দিয়েছেন। অথচ তিনি ব্যক্তিগতভাবেও আমাকে বা সচিব অনির্বাণ দত্তকে এই প্রশ্ন করতে পারতেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, এর আগে রাজ্যপাল চিফ পেট্রন হতেন। আমরা সত্যমবাবুকে পেট্রন হওয়ার জন্য প্রস্তাব দিতে চাই। দুটো পদের তফাৎ আছে। চিঠি লেখার আগে নিজেকে শিক্ষিত করা উচিত ছিল।”
এরপরই সহসচিবের বিরুদ্ধে সংস্থাকে প্রকাশ্যে অপদস্থ করার অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান বলেন, “আপনি সহসচিব হয়েও আইএফএ-কে ছোট করছেন। ব্যক্তিস্বার্থে এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। নোংরা রাজনীতি করছেন। আপনাকে অনাস্থা প্রস্তাব এনে সরিয়ে দেওয়া উচিত। কীভাবে সহসচিব হয়েছেন জানি। তাই সংযত হওয়ার পরামর্শ দেব।” আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন নজরুলের বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করেন।
যদিও তিনি কোনও ভুল করেননি বলে দাবি করেন সহসচিব। সভায় তিনি বলেন, “আমাদের কিছু জানানো হয় না। স্পনসর ঘোষণা বা পেট্রন প্রস্তাব দেওয়া নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আইএফএ-র সংবিধানে পেট্রন লেখা আছে, চিফ পেট্রন নয়। আগে এই পদে রাজ্যপাল ছিলেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের মধ্যে একজনকে এই পদে আনার কথা বলেছি। আমি কোনও ভুল করিনি।” অবনমন ইস্যুতে চাঁদনি স্পোর্টিং ক্লাবের আইনি নোটিসের প্রসঙ্গ সভায় উঠলে ফের একদফা সমালোচনার মুখে পড়েন ওই ক্লাবের সচিব পদে থাকা নজরুল।
এদিনের সভায় লিগের সূচি ও মাঠ নিয়ে সমস্যার কথা জানান গভর্নিং বডির কিছু সদস্য। যার জবাবে সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, “চলতি বছর লিগ চালাতে গিয়ে আমরাও কিছু সমস্যা টের পেয়েছি। তাই পুজোর পর থেকেই আমরা পরের বছরের লিগ আয়োজন নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করব। নতুন ক্যালেন্ডার তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন ডিভিশনে ক্লাবের সংখ্যা সমানুপাতিক করা হবে। ময়দানের মাঠের উপর নির্ভরতা কমাতেও পদক্ষেপ করব আমরা।”
এছাড়া স্পনসরশিপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা স্পনসরদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফেরানোর চেষ্টা করছি।” এদিনের সভায় আইএফএ সভাপতি, চেয়ারম্যান ও সচিবের পাশাপাশি দুই সহসভাপতি সৌরভ পাল ও বিশ্বজিৎ ভাদুড়ী উপস্থিত ছিলেন। পুজো নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আসেননি সহসভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস।