সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়সের হিসেব কষে কি ফিটনেসকে মাপা উচিত? বয়স দিয়ে কি পারফরম্যান্সকে আদৌ যাচাই করা যায়? সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় মাঠে কী করছে, সেটাই দেখা উচিত।
কিন্তু বঙ্গতনয় ঋদ্ধিমান সাহার (Wriddhiman Saha ) ক্ষেত্রে যে উল্টোটা ঘটেছিল। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট ঋদ্ধিকে ডেকে বলে দিয়েছিল, তাঁকে আর ভবিষ্যতের টেস্ট-ভাবনায় রাখা হচ্ছে না।
জাতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়, তাঁর টিম ম্যানেজমেন্টের অংশরা নিশ্চয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ দেখছেন।
শুক্রবারের গুজরাট টাইটান্স বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচটাও দেখেছেন।
[আরও পড়ুন: ছিটকে যাওয়া লোকেশ রাহুলের পরিবর্তে লখনউ নিল টেস্ট ক্রিকেটারকে, কে তিনি?]
হেটমায়ারকে করা নুর আহমেদের গুগলিটা শেষ পর্যন্ত ওয়াইড হয়ে যায়। শুধু ওয়াইড হওয়াই নয়, হেটমায়ারের লেগ স্টাম্প থেকে বলটা এতটাই দূরে ছিল যে নিশ্চিতভাবেই তা বাউন্ডারি হত। কিন্তু গুজরাট টাইটান্সের উইকেট কিপার ঋদ্ধিমান সাহা দুরন্ত ক্ষিপ্রতায় নিজের ডান দিকে ঝাঁপিয়ে সেই বল ধরেন। অতিরিক্ত রান হল না। ঋদ্ধি ধরতে না পারলে সেই বলের ঠিকানা হত বাউন্ডারি, বঙ্গতনয়ের মারাত্মক তৎপরতায় সেটাও হল না।
ঋদ্ধিমানের ওভাবে শরীর ছুঁড়ে বল ধরা বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখাচ্ছে সেদিনের টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তকে। তাঁদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তও যে ভুল প্রমাণিত হল। ঋদ্ধিমান নিজে প্রমাণ করে দিলেন বয়স কেবল একটা সংখ্যামাত্রই। এর বেশি কিছু নয়।
শিলিগুড়ির ছেলের বল বাঁচানো দেখে অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া স্থির থাকতে পারেননি। তিনি কুর্নিশ জানিয়েছেন ঋদ্ধিকে। ঋদ্ধিমানের প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করে হাততালি দিতে দেখা গিয়েছে পাণ্ডিয়াকে।
সোশ্যাল মিডিয়া ঋদ্ধিমানকে নিয়ে উত্তাল। জিও সিনেমার তরফ থেকে ঋদ্ধিমানের বল কিপ করার ভিডিও টুইটারে পোস্ট করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, ”রং ওয়ান গন রং, বাট সাহা স্প্রিংস টু রেসকিউ-হোয়্যাট আ টেক।”
ঋদ্ধি নিজে নুরের ওয়াইড বল কিপ করার মুহূর্তের ছবিটি পোস্ট করেছেন। সেখানে লেখেন, ‘ফিলস গুড।’ ওরকম ভাবে বল ধরলে তো ভাল লাগবেই। ওরকম তৎপরতা দেখলে ভাল লাগবে সবারই।
এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘গজব কা সেভ থা।’ আরেক ব্যবহারকারী ঋদ্ধিমানের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন. ‘এখনও পন্থের সেরা পরিবর্ত।’
অতীতে জাতীয় দলের জার্সিতে উইকেটের দু’ প্রান্তে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরেছেন ঋদ্ধিমান। ওরকম অস্বাভাবিক ক্যাচ ধরা দেখে তাঁকে ‘সুপারম্যান’ বলা হত। আইপিএলের মঞ্চে আবার দেখা যাচ্ছে সেই চেনা পরিচিত সুপারম্যানকে।
রাজস্থান রয়্যালসের রান তাড়া করতে নেমে ঋদ্ধিমান সাহা ঝোড়ো ব্যাটং করেন। ৩৪ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত থেকে যান তিনি। কিপিংয়ের পাশাপাশি ঋদ্ধির ব্যাটিংও নজর কেড়ে নিয়েছে। বঙ্গতনয় স্বল্পবাক। কথাবার্তা খুব বেশি বলেন না। পারফরম্যান্স তাঁর হয়ে কথা বলে। লড়াইয়ের আরেক নাম ঋদ্ধিমান সাহা।