সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে নিজেদের বন্দরে চিনা 'নজরদারি জাহাজ' ভেড়ানোর অনুমতি দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। গত বছর ভারত সরকারের আপত্তিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে চিনা জাহাজের উপর বিধিনিষেধ জারি করেছিল দ্বীপরাষ্ট্র। এবার সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হল। এ প্রসঙ্গে চিনের বিদেশমন্ত্রী আলি হাসানের বিবৃতি প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, আলাদা আলাদা দেশের জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম কখনই প্রযোজ্য হতে পারে না। অন্য দেশকে অনুমতি দিয়ে আমরা চিনকে বাধা দিতে পারি না।
সংবাদ মাধ্যম 'দ্য হিন্দুর' প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রী আলি সাবরি জানান, আগামী বছর থেকে নিজেদের বন্দরে বিদেশি নজরদারি জাহাজকে প্রবেশের অনুমতি দেবে চিন প্রশাসন। সম্প্রতি জাপান সফরে যাওয়ার সময় সেখানকার সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আলি বলেন, 'নিয়ম একটাই হওয়া উচিত। চিনের জন্য এক নিয়ম ও বাকি দেশের জন্য অন্য নিয়ম এটা হতে পারে না। আমরা কারও পক্ষ নিতে পারি না। তাছাড়া চিনের এই সমীক্ষাকারী জাহাজ সমুদ্রে জরিপের কাজ, ডেটা সংগ্রহ এবং বিশ্বের বাকি অংশের সঙ্গে সেই তথ্য ভাগ করে বাণিজ্যিকভাবে তা কাজে লাগানোর সুযোগ দেবে। এর সুফল পাবে শ্রীলঙ্কাও। যদিও ভারতের সন্দেহ সমীক্ষা নামে আসলে গুপ্তচরবৃত্তির কাজ করবে চিনা জাহাজ।
[আরও পড়ুন: জেলের মধ্যেই বোমা বিস্ফোরণ! অমরাবতীতে আতঙ্ক, ঘটনাস্থলে পৌঁছল বম্ব স্কোয়াড]
উল্লেখ্য, গত বছর শ্রীলঙ্কার বন্দরে ঘাঁটি গেড়েছিল চিনের ‘নজরদারি জাহাজ’ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’। এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয় ভারত সরকার। কার্যত ভারতের চাপেই শেষ পর্যন্ত চিনা জাহাজকে ফেরাতে বাধ্য হয় শ্রীলঙ্কা সরকার। এবার দ্বীপরাষ্ট্র সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে ভারতের। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ধীরে ধীরে চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। গত বছরের মে মাসে চায়না মার্চেন্টস গ্রুপ কলম্বো বন্দরে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা করেছিল। ২০২২ সালে দেউলিয়া হওয়ার পর এটিই শ্রীলঙ্কায় প্রথম বড় বিদেশী বিনিয়োগ। সেই সূত্র ধরেই চিনা ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে দ্বীপরাষ্ট্রের।
[আরও পড়ুন: হাথরাস কাণ্ডে যোগীকে চিঠি রাহুলের, ক্ষতিপূরণের অর্থ বাড়ানোর দাবি]
বলে রাখা ভাল, শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দর চিনা ঋণে তৈরি। সেই বিপুল পরিমাণের অর্থ ফেরত দিতে না পারায় বন্দরটি ৯৯ বছরের জন্য বেজিংকে লিজ দিয়েছে কলম্বো। ভারতের উদ্বেগ, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেখানে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করবে চিন। ধীরে ধীরে সেই পথেই এগোতে শুরু করেছে চিন। আর চিনের এহেন ষড়যন্ত্রের সামনে শ্রীলঙ্কা মাথানত করতে শুরু করেছে বলেই দাবি কূটনৈতিক মহলের।