সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুক্তির আগেই সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'পদাতিক' সিনেমার ঝুলিতে বিশেষ সম্মান। নিউ ইয়র্ক চলচ্চিত্র উৎসবে এই ছবি জিতে নিল সেরার সম্মান। সৃজিতের হাতে উঠল সেরা স্ক্রিনপ্লের পুরস্কার। আপ্লুত সৃজিত, সোশাল মিডিয়া এই সুখবর দেন। এবং ছবির গোটা টিমকে শুভেচ্ছাও জানালেন তিনি।
কয়েকদিন আগেই প্রকাশ্যে এসেছে পদাতিক ছবির টিজার। টিজারেই আভাস পাওয়া গেল, এই ছবিতে বড়সড় চমক দেবেন সৃজিত। যেদিন থেকে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর মৃণাল সেনের অবতার প্রকাশ্যে এসেছিল, সেদিন থেকেই অনুরাগীরা আশায় ছিলেন এই ছবির জন্য।
এই ছবি প্রসঙ্গে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর (Chanchal Chowdhury) জানিয়ে ছিলেন , ”মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করাটা একটা দুঃসাহসিক ব্যাপার। এই চরিত্রে অভিনয় করার জন্য সাহস থাকতে হয়। সেই সাহসটি আমার আছে কিনা এবং সেই সঙ্গে যোগ্যতা, আমার আছে কিনা সেটা বলার আগে, একজন তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে বিষয়টা চিন্তা করলে আমার তো অবিশ্বাস্য লাগছে। তবুও দুঃসাহস নিয়ে, কাজের প্রতি একটা লোভ, স্বপ্ন থাকার কারণে এই কাজটি করা। তার উপর সৃজিত মুখোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে কাজ করা। ওর যতগুলো কাজ দেখেছি। তা দেখে সৃজিতের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল।”
চঞ্চলের কথায়, ”মৃণাল সেন চলচ্চিত্র জগতের একজন দিকপাল। শ্রেষ্ঠতম একজন পরিচালকের চরিত্রে অভিনয় করা মানে একটা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকা। ভাল-মন্দ এটা পরের বিষয়।”
[আরও পড়ুন: বঙ্গ রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে তারকাদের চালচিত্র, ভোট সাম্রাজ্য এবার কার দখলে? ]
চঞ্চল চৌধুরী আরও জানান, ”সৃজিতের সঙ্গে আরও আগে কাজ করার কথা ছিল। কোভিড পিরিয়াডে একটা কাজ নিয়ে কথাও এগিয়ে ছিল। সৃজিতের ওয়েব সিরিজ রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননিতে আমার কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনাকালে ছবিটির শুটিং বাংলাদেশে না হওয়ায়, তা আর হল না। তবে শেষমেশ পদাতিক ছবির হাত ধরে সৃজিতের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব হল।”
চঞ্চল আরও জানালেন, ”কলকাতার দর্শকরা আমার কাজ দেখতে চাইছেন। কলকাতার মানুষ আমাকে ভালবাসেন। সেখানকার কলাকুশলী, শিল্পীরা চাইছেন আমি কলকাতায় কাজ করি। এটা আমার জন্য খুবই সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেটা সৃজিতের হাত ধরেই শুরু হচ্ছে। আশা করি ব্যাপারটা খুবই চমৎকার হবে। ”
কীভাবে ছবির মৃণাল সেন হয়ে উঠছেন চঞ্চল? প্রশ্নের উত্তরে চঞ্চল জানিয়ে ছিলেন, ”আমাকে কিছু বইপত্র দেওয়া হয়েছে, কিছু ভিডিও দেওয়া হয়েছে। সেটা তো একটা ব্যাপার। কিন্তু মানুষটার ভিতরটা, মানুষটার দৃঢ়তা, মানুষটার অন্তরটা তো দেখা যায় না। এই বিষয়গুলো আসলে অনুভব করতে হয়। তাঁর ছবির বক্তব্য, ছবি তৈরির উদ্দেশ্য সবগুলো বুঝে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। কঠিন কাজ, সময়সাপেক্ষ কাজ। আমার এখানেই একটু অতৃপ্তি রয়েছে, আরও বেশি সময় ধরে ওকে বুঝতে হত। আরও বেশি সময় দরকার ছিল। আমি আসলে একটা চ্য়ালেঞ্জ নিয়েছি। নিজের দিক থেকে একশো শতাংশ চেষ্টা করব। মৃণাল সেন হয়ে ওঠার জন্য যা যা প্রস্তুতি লাগবে তা আমি নেব।”
মৃণাল সেনের কোন কাজটি আপনার প্রিয়?
চঞ্চল চৌধুরী জানান, ”আমি ঠিক এভাবে দেখি না। একজন শিল্পীর সারাজীবনের যে কর্ম তাঁর নানা ভাগ থাকে। শুরুর দিকে তিনি কীরকম কাজ করেছেন। পরিণত বয়সে এসে তিনি কেমন কাজ করেছেন। প্রত্যেক শিল্পীরই এরকম ভাগ থাকে। তবে দর্শনটা যদি ঠিক থাকে, তাহলে উনি একটা জায়গায় গিয়ে জার্নিটা শেষ করেন। মৃণাল সেন যা জায়গা থেকে জার্নিটা শুরু করেছিলেন, সেই একইরকম কাজ নিয়েই জার্নিটা শেষ করতে পেরেছেন। এরকম সৌভাগ্য সবার হয় না। তাঁর কাজ ধারাবাহিক ভাবে দেখলে সেটা বোঝা যায়। মৃণাল সেনের কাজে দর্শনটাই আমার প্রিয়।”