সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: চাকরি বাতিলের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি সোমবার। ফলে এখনও ঝুলে রইল চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষাকর্মীর ভাগ্য। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এসএসসির করা মামলায় কমিশনকে শীর্ষ আদালতের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। জানা গিয়েছে, যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করতে তারা প্রস্তুত বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, ওএমআর শিট তো ধ্বংস করা হয়েছে। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করবেন কী করে?
গত সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হয়েছে ২০১৬-র এসএসসি (SSC) প্যানেল। চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষককর্মী। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মামলা দায়ের করেছে রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই রাজ্যের কাছে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, "চাকরির পরীক্ষার ওএমআর শিট কতদিনের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়?" জবাবে রাজ্যের তরফে মুকুল রোহতাগি জানান, ১ থেকে ২ বছর সংরক্ষণ করা হয়। এর পরই প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, "ওএমআর শিট তো ধ্বংস করে দিয়েছেন তাহলে কীভাবে যোগ্য-অযোগ্যদের পৃথক করবেন?" জবাবে রাজ্য়ের আইনজীবী জানান, "বিকল্প পথ রয়েছে।"
[আরও পড়ুন: কলকাতাকে গিলে খাচ্ছে দহন দানব! ছয় দশকের রেকর্ড ভেঙে পারদ ৪২ ডিগ্রিতে]
তবে সে জবাবে আদালত যে মোটেও সন্তুষ্ট হয়নি তা বিচারপতির মন্তব্যেই স্পষ্ট। মামলাকারীর কাছে আদালত জানতে চায়, ২৫ হাজার বিরাট অঙ্কের সংখ্যা। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করবেন কী করে? এ বিষয়ে আমাদের কাছে সমস্ত তথ্য স্পষ্ট হতে হবে। চাকরি বাতিল মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় নিয়ে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, আদালতের অন্য উপায় না থাকলে এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যদি যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করার ব্যবস্থা থাকে তবে তা হাই কোর্টে জানানো হল না কেন? এদিন আদালতের পর্যবেক্ষণ, টেন্ডার ছাড়াই নাইসাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। মিরর ইমেজ ছাড়াই নষ্ট করা হয়েছিল ওএমআর শিট।
ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করলে রাজ্যকে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, এই দুর্নীতি বিশাল বড়। এই দুর্নীতির সুবিধা কারা পেয়েছে? সেটা জানা দরকার। এদিকে চাকরিহারা আন্দোলককারীদের একটাই দাবি, কারা অযোগ্য তা নিশ্চিত করুক সুপ্রিম কোর্ট, সিবিআই, ইডি। অযোগ্যদের 'দুর্নীতি'র দায় তাঁরা নেবেন না। সেই দাবিতে কলকাতার শহিদ মিনারে চত্বর আন্দোলন করছেন চাকরিহারারা।