বিক্রম রায়, কোচবিহার: অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার মতো জেদ আর আইনের উপর অগাধ আস্থা তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। লড়াই জারি রাখলে ন্যায় মিলবেই, নতুন করে এই বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। কারচুপি করে নয়, যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে শিক্ষিকার চাকরিটা কেড়ে নিয়েছিলেন। এসএসসি (SSC) আন্দোলনের মুখ কোচবিহারের সেই ববিতা সরকার কিন্তু এবার নতুন করে সমস্যায় পড়লেন। রুটিরুজির চিন্তার অবসান হয়েছে ঠিকই। মেখলিগঞ্জের স্কুলে তিনি শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এবার মাথা গোঁজার ঠাঁই তাঁকে নতুন ভাবনায় ফেলেছে। মেখলিগঞ্জ (Mekhliganj) এলাকায় থাকার জন্য বাড়ি ভাড়া পেতে সমস্যা হচ্ছে ববিতার। আপাতত সমস্যা মিটলেও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় তিনি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন।
মেখলিগঞ্জের (Mekhliganj) ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা ববিতা সরকার। মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর ‘ভুয়ো’ চাকরি তিনি পেয়েছেন সৎপথে, আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। চাকরির প্রয়োজনেই তাঁকে থাকতে হচ্ছে মেখলিগঞ্জে। আর সেখানেই সমস্যায় পড়েছেন ববিতাদেবী। অভিযোগ, তাঁকে কেউ বাড়ি ভাড়া (Rent house) দিতে চাইছেন না। একটি বাড়ি দেখে পছন্দ হওয়ায় তা ভাড়া নিতে চেয়েছিলেন। মালিক প্রাথমিকভাবে রাজিও হন। কিন্তু ববিতাদেবীর অভিযোগ, ”উনি ভাড়া দেবেন বলেছিলেন। তারপর যখন অ্যাডভান্সের টাকা দিতে গেলাম, তখন জানালেন যে আমাকে নাকি বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে না। চাপ আছে। আমার তো মনে হয় শাসকদলই তাঁর উপর চাপ তৈরি করছে। যাতে আমাকে বাড়িটা ভাড়া দেওয়া না হয়।”
[আরও পড়ুন: ‘হিন্দুরা দাঙ্গা করে না’, শাহর ‘উচিত শিক্ষা’ মন্তব্যে সমর্থন হিমন্তর]
এরপর অবশ্য পরিচিত একজনের সূত্র মারফৎ একটি বাড়ি আপাতত ভাড়া পেয়েছেন ববিতা সরকার। কিন্তু চিন্তার মেঘ কাটছে না এখনও। ববিতাদেবীর স্বামী ব্যবসার সূত্রে প্রায়ই বাইরে থাকেন। ছোট ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁকে একা থাকতে হয়। এই পরিস্থিতিতে মেখলিগঞ্জের ওই ভাড়া বাড়িতে তাঁর থাকা কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে সন্দিহান রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ‘দিদিমনি’। তাই আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন তিনি। চাকরি নিয়ে ন্যায় বিচারের পর আরও একবার আদালতের দোরগোড়ায় দাঁড়াতে চায় এসএসসি আন্দোলনের মুখ।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর সভা নিয়ে জট কাটল, শনিবার অভিষেকের গড়েই কর্মসূচি বিরোধী দলনেতার]
এদিকে,ববিতা সরকারের সমস্যার কথা পৌঁছেছে তৃণমূলের অন্দরেও। তাঁর নিরাপত্তাহীনতার নেপথ্যে শাসকদলের একটা যোগ যেহেতু উঠে আসছে, তাই সতর্ক দল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানিয়েছেন, ”ওঁর কোনও সমস্যা হলে স্থানীয় দলের নেতৃত্বকে বলব, বিষয়টা দেখে সমাধান করে দিতে। ওঁর যেন কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”