নিরুফা খাতুন: এসএসসি দুর্নীতি মামলা নিয়ে তুমুল আলোচনার মাঝে নতুন মাত্রা যোগ হল মঙ্গলবার। কার্যত জনতার রোষের মুখে পড়লেন ইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে যাওয়া পার্থবাবুকে লক্ষ্য করে জুতো ছুঁড়ে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই প্রতিবাদের আরেক মুখ হয়ে উঠলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গৃহবধূ শুভ্রা ঘোড়ুই। এখন আলোচনার কেন্দ্রে তিনিই।
মঙ্গলবার জোকার (Joka) ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। বেরিয়ে তিনি গাড়িতে ওঠার পরই আচমকা তাঁর দিকে উড়ে এল একপাটি চটি। যদিও ততক্ষণে বিপদ বুঝে নিরাপত্তারক্ষীরা ঘিরে ধরেছিলেন পার্থবাবুকে। দ্রুত তাঁকে নিয়ে বেরিয়ে যায় গাড়ি। ঘটনার পরই সংবাদমাধ্যমের সমস্ত ক্যামেরার ফোকাসে এসে পড়েন ওই মহিলা। জানা যায়, তাঁর নাম শুভ্রা ঘোড়ুই। তিনি আমতলার বাসিন্দা, সাধারণ এক গৃহবধূ। এসএসসি (SSC), শিক্ষকতার চাকরি, বঞ্চনা – এসবের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই তাঁর। তাহলে কেন পার্থবাবুকে দেখে ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন?
[আরও পড়ুন: ‘রাগ ছিল, জুতো মেরে শান্তি পেয়েছি’, ESI হাসপাতালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর হামলা মহিলার]
‘সংবাদ প্রতিদিন’কে কিন্তু সব কথা অকপটেই বললেন শুভ্রাদেবী। জানালেন, তিনি হাসপাতালের আউটডোরে চেক আপ করাতে এসেছিলেন। তা হয়ে যাওয়ার পর ওষুধ নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। তখনই শুনতে পান যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে সেখানে। এরপর পার্থবাবু বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় তাঁর দিকে নিজের চটি ছুঁড়ে মারেন শুভ্রাদেবী। তাঁর বক্তব্য, ”যখন টিভিতে দেখেছিলাম, এত এত টাকা উদ্ধার হচ্ছে, ওরা অ্যারেস্ট হয়েছে, তখন খুব রাগ হয়েছিল। এত লোকের টাকা মেরে, চাকরি মেরে ওরা এত ফ্ল্যাট, বাড়ি করেছে! মনে মনে ভেবেছিলাম, ওই লোকটাকে হাতের কাছে পেলে জুতোপেটা করব। আজ এই খবরটা শুনে সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি।”
[আরও পড়ুন: ‘অর্পিতা-পার্থর সম্পর্ক নিয়ে কখনও প্রশ্নই জাগেনি’, বললেন মডেল-অভিনেত্রীর মা]
শুভ্রাদেবী বলছেন, ”আমার রাগ ছিল। শুধু আমার নয়, গোটা বাংলার মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। জুতো মেরে শান্তি পেয়েছি। তবে জুতোটা টাকে লাগলে ভাল লাগত। আপনারাই বলুন, ওকে কি মালা দিয়ে বরণ করলে ভাল লাগত?” এরপর অবশ্য শুভ্রাদেবী আর দাঁড়াননি। যে জুতো তিনি ছুঁড়ে নিজের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, তা ফিরিয়েও নেননি। খালি পায়েই হাঁটা দিয়েছেন বাড়ির পথে। মিনিট কয়েকের একটা ঘটনা কিন্তু বুঝিয়ে দিল, এ-ও এক প্রতিবাদের ভাষা, প্রতিরোধের আগুন।