অভিরূপ দাস: মুখে সুচ রেখে সেলাই করতে গিয়েই বিপত্তি। আচমকা হাঁচি আসায় তা সোজা ঢুকে যায় ফুসফুসে। বর্ধমানের (Purba Bardhaman) বাসিন্দা ১৭ বছরের রেহানা খাতুন পরেন বিপাকে। ফুসফুসে সুচ আটকে চোখ মুখ ঠিকরে বেরিয়ে আসার অবস্থা। জটিল অস্ত্রোপচার করে কিশোরীর জীবন বাঁচালো এসএসকেএম হাসপাতাল।
সোমবার বাড়িতেই সেলাই করছিলেন রেহানা। আচমকাই শুয়ে পরেন। বাড়ির লোক জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছে? ইশারায় রেহানা বলেন মুখে রাখা সুচ ভিতরে চলে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে রেহানাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির কাছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায় আড়াআড়ি ভাবে বিঁধে রয়েছে সুচটি। কিন্তু সেখানে ফুসফুস থেকে সুচ বের করার যন্ত্র ছিল না। তড়িঘড়ি ওই রোগীকে রেফার করা হয় এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে। মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে নিয়ে আসা হয় রোগীকে। চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন দ্রুত সুচ বের না করলে ফুসফুসকে এফোর-ওফোর করে দেবে তা। তৈরি হয় মেডিক্যাল টিম। যে টিমে ছিলেন ডা. সায়ন হাজরা, ডা. কৌস্তভ দাস বিশ্বাস, ডা. সৌরভময় বন্দ্যোপাধ্যায়, ডা. যিষ্ণু হোর, ডা. মৈনাক সাহা ও ডা. তুষার হালদার। ঠিক হয় রিজিড ব্রঙ্কোস্কপির মাধ্যমে বের করা হবে সুচ।
[আরও পড়ুন: কয়লা কাণ্ড: গ্রেপ্তার না করলে দেশে ফিরতে রাজি বিনয়, CBI-এর মত জানতে চাইল হাই কোর্ট]
ডা. সায়ন হাজরার কথায়, এই পদ্ধতিতে রোগীকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে গলায় নল ঢোকানো হয়। নলের সামনে থাকে আলো, ক্যামেরা। যার মাধ্যমে ফুসফুসের ভিতরটা দেখা যায়। এই পদ্ধতিতে ফুসফুসে বিঁধে থাকা কোনও কিছু বের করা যায়। তবে প্রথমবারেই অর্থাৎ একবারই সুযোগ পাওয়া যায় আটকে থাকা কিছু বের করে আনার। নাহলে ফুসফুস থেকে রক্ত ক্ষরণের আশঙ্কা থাকে। কিন্তু নিখুঁত দক্ষতার কারণে এক সুযোগেই বের করা গিয়েছে রেহানার ফুসফুসে আটকে থাকা সুচটি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগী আপাতত সুস্থ। আগামিকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে।