রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পদে থেকেও সংখ্যালঘুদের জন্য কোনও কাজ করতে না পারার অভিযোগে অনেকদিন ধরেই ক্ষোভপ্রকাশ করছিলেন বিজেপির (BJP) সংখ্যালঘু নেতারা। তবে এবার আর শুধু ক্ষোভপ্রকাশেই থেমে থাকলেন না তাঁরা। পরিবর্তে নিলেন দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত। পদ্ম শিবিরে লাগল ভাঙন। ইস্তফা দিলেন বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সহ সভাপতি কাশেম আলি। ইতিমধ্যেই ইস্তফাপত্র বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ কবিরুল ইসলামও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দু’জনেই তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করে কুণাল ঘোষের দ্বারস্থও হয়েছেন।
২০১৭ সালে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন কাশেম আলি (Kashem Ali)। হাতে তুলে নিয়েছিলেন বিজেপির পতাকা। তাঁকে সংখ্যালঘু মোর্চার সহ সভাপতি পদও দেওয়া হয় দলের তরফে। তবে তা সত্ত্বেও তৃণমূলে কেন ফিরতে চাইছেন কাশেম? তাঁর মতে, “বিজেপিতে থেকে আর যাই হোক সংখ্যালঘুদের জন্য কোনও কাজ করা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত।” তিনি একা নন, আরও অনেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন বলেও দাবি কাশেমের। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কবিরুলের বক্তব্যও প্রায় একইরকম। তাঁর দাবি, বিজেপিতে রয়েছেন ঠিকই। তবে দলের তরফে তাঁকে সেভাবে কাজে লাগানো হয়নি। এছাড়াও নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের গ্রেপ্তারিরও তীব্র বিরোধিতা করেছেন কবিরুল। নারদ কাণ্ডে জড়িত বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। একাধিক বিষয়ে ‘বীতশ্রদ্ধ’ হওয়ার ফলেই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত কবিরুলের।
[আরও পড়ুন: ৩৮ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে নিউ বারাকপুরের কারখানার আগুন, ৪জনকে খুঁজতে উড়বে ড্রোন]
শোনা যাচ্ছে, গত ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দেওয়া পুরশুড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ কাশেমও নাকি ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন। কাশেম, কবিরুল কিংবা পারভেজ ছাড়াও বিজেপিতে থাকা বহু সংখ্যালঘু নেতা-কর্মী দলবদল করতে পারেন বলেই খবর। তার ফলে বিজেপি শিবিরে বেশ বড়সড় ভাঙন ধরতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। যদিও বিজেপি তাতে আমল দিতে নারাজ। এদিকে, বিজেপি ছেড়ে যাঁরা তৃণমূলে (TMC) আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন, তাঁদের নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই দাবি কুণাল ঘোষের। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2021) আগে দলবদলের হিড়িক লেগেছে। একের পর এক অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। তার ফলে পদ্ম শিবিরের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছিল। তবে বর্তমানে তার বিপরীত ছবিই যেন শাসকদল তৃণমূলকে অক্সিজেন জোগাচ্ছে।