ধীমান রায়, কাটোয়া: কাটোয়ায় যাত্রীবাহী বাস থেকে উদ্ধার হল প্রচুর বিস্ফোরক। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ও কাটোয়া পুলিশের যৌথ অভিযানে ৬ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধারের পাশাপাশি একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর। শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ এসটিকেকে রোডে কাটোয়ার গড়াগাছা বাসস্ট্যান্ডের কাছে কাটোয়া-নবদ্বীপ রুটের নবদ্বীপগামী একটি বাসে অভিযান চালান তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় ৬ কেজি বিস্ফোরক। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম এজাবুল শেখ। তার বাড়ি পূর্বস্থলী থানার খড়দত্ত পাড়া এলাকায়। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বেশিরভাগ বিস্ফোরকই বারুদ।
জানা গিয়েছে, ধৃত এজাবুল একজন দাগি দুষ্কৃতী। সে বিস্ফোরক সরবরাহের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই যুক্ত বলে আগে থেকে খবর ছিল এসটিএফের কাছে। এদিন এজাবুলকে হাতেনাতে পাকড়াও করার জন্য এসটিএফের একটি বাহিনী কাটোয়ায় আসে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আগে থেকেই এসটিকেকে রোডের উপর ওঁৎ পেতে বসেছিল কলকাতার এসটিএফের একটি দল ও কাটোয়া থানার পুলিশ। তাঁরা সাদা পোশাকে অপেক্ষা করছিলেন৷
[আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ ও জাহাঙ্গিরপুরী হিংসায় রং চড়ানো খবর নয়, টিভি চ্যানেলগুলিকে নির্দেশ কেন্দ্রের]
এরপর কাটোয়া থেকে নবদ্বীপগামী একটি যাত্রীবাহী বাস সেখানে পৌঁছতেই প্রথমে সেটিকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। তারপরেই বাসের ভিতর থেকে প্রথমে এজাবুলকে নামিয়ে নিয়ে আসা হয়। তার সঙ্গেই ছিল বারুদ ভরতি ব্যাগ। ব্যাগটিও খুব সাবধানে নামিয়ে নিয়ে আসা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় এজাবুলকে। এই বিস্ফোরক ভরতি ব্যাগটি নিয়ে ওই দুষ্কৃতী কোথায় যাচ্ছিল, তা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ধৃতকে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে পুলিস, ওই ব্যাগে দু’ধরনের বিস্ফোরক ছিল। একটিতে আর্সেনিক সালফায়েড ও অন্যটি ছিল পটাসিয়াম ক্লোরাইড। দুটি রাসায়নিক মিশিয়েই বোমা তৈরি হয়৷ আর্সেনিক সালফায়েডের পোশাকি নাম লালমশলা। আর পটাসিয়াম ক্লোরাইডকে সাদামশলা বলে। এই বিস্ফোরক বিহার থেকে আনা হচ্ছিল। তারপর বীরভূম হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চক্রটি বিস্ফোরক সরবরাহ করে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এজাবুলকে জেরা করে জানার চেষ্টা হচ্ছে এই চক্রের সঙ্গে আর কারা রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘আমি অসুস্থ, হাঁটতে পারছি না’, সিবিআইকে ইমেল করে ৪ সপ্তাহ সময় চাইলেন অনুব্রত]
যাত্রীবাহী বাসে এভাবে বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া যাত্রীসুরক্ষার পক্ষে কতটা বিপদজনক, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিস্ফোরক-সহ দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করা এসটিএফ ও কাটোয়া পুলিশের বড় সাফল্য বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ধৃত এজাবুল এখন কাটোয়া পুলিশের হেফাজতে। তকে রবিবার কাটোয়া আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এর আগেও দু’বার বর্ধমান থেকে কলকাতাগামী যাত্রীবাহী বাস থেকে এতটা বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।