অর্ক দে, বর্ধমান: বিশাল আকৃতির এক ফুল। রাত হলেই তা থেকে ‘গন্ধ’ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে সেই গন্ধে মোহিত হয়ে যাওয়া দূরঅস্ত, এলাকায় টিকতেই পারছেন না বাসিন্দারা। বর্ধমানের (Burdwan) ইদিলপুর এলাকায় এই ফুল ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে এলাকাবাসীর মনে। এর আগে এই ধরনের ফুল বাসিন্দারা দেখেননি। তাই কৌতূহল বাড়ছে, বাড়ছে আতঙ্কও।
ইদিলপুর এলাকার একটি গাছের তলায় কয়েকদিন ধরেই ধীরে ধীরে ফুলটিকে বাড়তে দেখছেন এলাকাবাসীর। প্রথম দিকে সেরকম নজর না দিলেও। গত দু’দিন ধরে রাত হলেই এলাকা দুর্গন্ধে ভরে উঠছে। সকাল বেলাতে সেই দুর্গন্ধ আর থাকছে না। দুর্গন্ধের কারণ খুঁজতে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, গাছের গোড়ায় গাঢ় বাদামি রঙের বিশাল আকৃতির পাপড়ির মতো ছড়ানো জিনিসটি থেকেই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা পঞ্চানন ধারা বলেন, “এরকম ফুল আগে কখনও দেখিনি। ভোরে খড় কাটতে গিয়ে প্রচণ্ড গন্ধ নাকে আসে। তখনই বুঝতে পারি এই ফুলটি থেকেই গন্ধ আসছে।”
[আরও পড়ুন: গগনযানের গতিবিধি নজরে রাখতে উপগ্রহ পাঠাবে ISRO, সবুজ সংকেত নয়া প্রকল্পে]
ফুলটির পরিচয় নিয়ে খোঁজখবর করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অশোক ঘোষ বলেন, “এটা আর কিছু নয়, আমার খাবার হিসেবে যে ওল ব্যবহার করি, সেটাই। যার বিজ্ঞানসম্মত নাম আমোফফালাস টাইটেনিয়াম। তারই পুষ্পমঞ্জরী এটি। অত্যধিক গরমে বংশবিস্তারের জন্য অনেক সময় ওল গাছে এই ধরণের পুষ্পমঞ্জরী দেখা যায়।” বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানী জয়প্রকাশ কেশরী বলেন, “অনেক সময় চাষ করার পর মাটি থেকে তুলে নিলেও শিকড়ের অংশ থেকে যায়। যা থেকে পরবর্তী কালে মাটির তলায় আবার ওল জন্মায়। বংশবিস্তারের জন্য পুষ্প মঞ্জরী (১২-১৪ বছর পর) তৈরি হয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এটি থেকে পচা মাংসের মতো গন্ধ বের হয়। খুবই সাধারণ প্রজাতির ওল গাছ এটি। অনেক জায়গাতেই এইধরণের পুষ্পমঞ্জরী দেখা যায়।”