সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবারই ভয়াবহ সৌরঝড় (Solar Storm) আছড়ে পড়তে চলেছে পৃথিবীতে। শুক্রবার মার্কিন মহাকাশ আবহাওয়া সংক্রান্ত সংস্থা ‘ন্যাশনাল ওসিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে’র তরফে একথা জানানো হয়েছে।সংস্থার পক্ষে জানানো হয়েছে, বড়সড় একটি ‘সান স্পট’ নজরে পড়েছে। বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে সূর্যের শরীর থেকে ‘করোনাল মাস ইজেকশন’ হচ্ছে। যা দু’দিনের মধ্যেই পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা তাদের।
কী হতে পারে এই সৌরঝড়ের দাপটে? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই ঘটনায় পৃথিবীর চারপাশে থাকা চৌম্বকক্ষেত্রে কম্পন দেখা যাবে। এর ফলে দুই মেরুতে ঘনঘন মেরুজ্যোতির দেখা মিলবে। বেশ কিছু সময়ের জন্য অকেজো হয়ে যেতে পারে যাবতীয় রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা। দক্ষিণ মেরু, উত্তর মেরু, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকায় পড়তে পারে এই ঝড়ের প্রভাব। প্রভাব পড়তে পারে ভারতীয় উপমহাদেশেও। বিদ্যুৎ পরিষেবার পাশাপাশি জিপিএস ও মোবাইল পরিষেবাতেও ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
[আরও পড়ুন: পুরোপুরি টাক পড়ার পরও গজাবে চুল! হার্ভার্ডের গবেষকদের হাতে ‘আশ্চর্য মলম’]
সৌরঝড় ঠিক কী? সূর্য লাগাতার পৃথিবীর দিকে তড়িদচ্চুম্বকীয় কণা ছুঁড়ে মারতে থাকে। এর ফলে তৈরি হয় সৌর বাতাস। সেই বাতাসকে পৃথিবী তার মেরুদেশে পাঠিয়ে দেয়। ওই সৌর বাতাসের থেকে কোনও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয় না আমাদের গ্রহকে। কিন্তু সৌর বাতাস থেকেই সৃষ্টি হয় সাংঘাতিক সৌরঝড়ের। আসলে সূর্যের মধ্যে সব সময়ই হয়ে চলেছে বিস্ফোরণ। সেই বিস্ফোরণের ধাক্কাতেই ব্যাপক হারে প্লাজমার কার্যত সুনামি দেখা দিয়েছে। সেই প্লাজমা কণাই পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার ফলে সৃষ্টি হবে সৌরঝড়ের।
উল্লেখ্য, আগামিদিনে সৌরঝড় থেকে পৃথিবীর আরও ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, এমন এক সৌরঝড় আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীতে যার ধাক্কায় নামতে পারে বড়সড় বিপর্যয়। ‘সোলার সুপারস্টর্মস: প্ল্যানিং ফর অ্যান ইন্টারনেট অ্যাপোক্যালিপ্স’ নামের ওই গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, এই ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে ১.৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত। তবে এর ফলে স্থানীয় ইন্টারনেট পরিকাঠামোর ক্ষতি হবে না। অপটিক্যাল ফাইবারবাহিত পরিষেবার ক্ষেত্রে বিপদ না থাকলেও আসল সমস্যা সমুদ্রের তলায় অবস্থিত কেবল লাইনের ক্ষেত্রে। যদি সেগুলি ওই সৌরঝড়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেক্ষেত্রে আন্তর্দেশীয় পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে।