সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব পরে অন্যান্য দিনের মতোই করাচির গুরু বস্তির স্কুলে যান আনুম আগহা৷ হিজাবে মুখ ঢাকা অবস্থায় স্কুলের বাচ্চাদের ‘সেলাম’ করলেন তিনি৷ জবাবে , ‘জয় শ্রীরাম’ বলে চিৎকার করে উঠল স্কুলের পড়ুয়ারা৷ কেন জানেন? স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষগুলির কাছে এটা আত্মরক্ষার ও নিজেদের সংঘবদ্ধ করার একটা কৌশল৷ কারণ, দিনের পর দিন জমি মাফিয়াদের তাণ্ডবে কার্যত হাত ছাড়া হতে বসেছে তাঁদের ভিটেমাটি৷ দুষ্কৃতীদের লোভের হাত থেকে বাদ যায়নি বস্তির একমাত্র স্কুলটিও৷ শেষে অবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যে, বস্তির বাচ্চাদের নিয়ে বর্তমানে মন্দিরের ভিতরে পড়াতে হচ্ছে আনুম আগহাকে৷
[দেশের আকাশ ঢাকবে অভেদ্য বর্ম, ভারতের হাতে আসছে ‘এস-৪০০’]
জানা গিয়েছে, করাচির দক্ষিণাংশে অবস্থিত এই গুরু বস্তি এলাকায় ৮০ থেকে ৯০টি হিন্দু পরিবার বসবাস করে৷ গতবছর, মাফিয়ারা স্কুলের জমি কেড়ে নিলে মন্দিরের ভিতরেই ক্লাস শুরু করেন আনুম৷ জানান, তাঁকেও দেওয়া হয়েছে প্রাণনাশের হুমকি৷ কিন্তু নিজের লক্ষ্যে এখনও স্থির তিনি৷ গত চারবছরে এলাকার হিন্দুদের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হয়েছে৷ জমি দখলের তাগিদে মাফিয়ারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে অনেক বাড়িতে৷ কেবল তাই নয়, পুলিশ ও প্রশাসনকে হাত করেও অত্যাচার করা হয়েছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরে৷ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ৷ একাধিকবার সংখ্যাগুরু প্রভাবশালী গোষ্ঠীর দ্বারা প্রহৃত হতে হয়েছে সংখ্যালঘুদের৷ ওই বস্তিরই এক বাসিন্দা জানান, কয়েক বছর আগে সমগ্র বস্তিকে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়৷ এলাকার প্রভাবশালী মুসলিমরা বলেন, বস্তির স্থানে মসজিদ নির্মাণ করা হবে৷ কিন্তু সংখ্যালঘু হিন্দুদের মিলিত প্রতিবাদে পিছু হটতে বাধ্য হয় ওই জমি মাফিয়ারা৷ তাঁদের সংঘবদ্ধ হতে অনেকটাই সাহায্য করেছে একটা স্লোগান, ‘জয় শ্রীরাম’৷’
[ধাক্কা খেল চিন, ‘বেল্ট এন্ড রোড’ প্রকল্পে না মালয়েশিয়ার]
উল্লেখ, সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি জমি মাফিয়াদের অত্যাচার ক্রমশ বেড়ে চলেছে সমগ্র পাকিস্তান জুড়েই৷ এর প্রতিবাদে দিন কয়েক আগেই সোচ্চার হয় পাকিস্তানের হায়দরাবাদের কয়েকটি হিন্দু সংগঠন৷ তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদতে দিনের পর দিন চলছে হিন্দুদের উপরে অত্যাচার৷ এই অভিযোগে শহরের প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান বিক্ষোভেও বসেন হায়দরাবাদের বিভিন্ন এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নাগরিকরা৷ তাঁদের আরও অভিযোগ, বিভিন্ন এলাকায় দখল করা হচ্ছে তাঁদের সমাধিস্থল ও শ্মশানগুলিকে৷ যাতে পিছন থেকে মদত দিচ্ছে ওই এলাকার প্রভাবশালী পাক নাগরিকরা৷ এমনকি এই বিষয়ে পুলিশকে কোনও অভিযোগ জানাতে গেলেও মিলছে না সহায়তা৷ ফলে তাঁদের অনুমান, দখলদারদের সঙ্গে যোগ রয়েছে প্রশাসনের একটা অংশেরও৷ কোনও ভাবে প্রভাবশালীদের মদতেই কাজ করছে পুলিশ ও প্রশাসন৷
The post ‘সেলাম’ নয় পাকিস্তানের এই স্কুলে পড়ুয়ারা বলছে ‘জয় শ্রীরাম’ appeared first on Sangbad Pratidin.