ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: অনলাইনে পড়াশোনার পর অফলাইনে পরীক্ষা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া এই বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। এই দাবিতে সোমবার রাতভর বিশ্বভারতীর (Vishva Bharati) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থান বিক্ষোভ দেখালেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। সারারাত ঘেরাও করে রাখা হয় কর্মসচিবকে। টানা ২০ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকালে তিনি ঘেরাওমুক্ত হলেন। এভাবে আটকে থাকার জেরে তিনি খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আপাতত ঘেরাও (Gherao)তুলে নিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের হুঁশিয়ারি, অফলাইনের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন চলবে।
সোমবার সকাল থেকেই পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ক্যাম্পাসের গেট টপকে ভিতরে ঢুকে মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার ক্লাস বন্ধ করে দেন তাঁরা। বেশ কয়েকটি দাবিতে তাঁদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল অবিলম্বে হস্টেল (Hostel) খোলা, অফলাইনে পড়াশোনা শুরু, পরীক্ষার নেওয়া, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সীমা বাড়াতে হবে। দুপুর থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে (Central Office) ঢুকে কর্মসচিবকে ঘেরাও শুরু করেন তাঁরা। তা চলল সারারাত।
[আরও পড়ুন: গাড়ি চালানো শিখতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে বীরভূমের ‘বাদাম কাকু’, ভরতি হাসপাতালে]
এদিকে, বিশ্বভারতী কর্মসচিব আশিস আগরওয়াল নিজে শিব ভক্ত। আজ শিব চতুর্দশী। তাই শিবের পুজো দিতে চেয়ে ভোরবেলা বাইরে বেরতে চান। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাঁকে ছাড়তে নারাজ। বহুবার অনুরোধ করেও ঘেরাওমুক্ত হননি তিনি। ফলে সকালের দিকে দেখা যায়, কর্মসচিব আশিস আগরওয়াল শিবের নাম করতে করতে মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি দিচ্ছেন! এভাবেই তিনি কেন্দ্রীয় অফিসের বাইরে বেরনোর চেষ্টা করেন। তাঁকে আটকাতে ছাত্ররাও মাটিতে শুয়ে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ছুটে আসেন নিরাপত্তারক্ষীরা। ছাত্রছাত্রীরা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের দাবি না মানলে এই ঘেরাও চলবে। তবে পরবর্তীতে কর্মসচিব ঘেরাওমুক্ত হন। ততক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছে ২০ ঘণ্টা। বিষয়টি নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সবমিলিয়ে, এই আন্দোলনের জেরে ফের বিশৃঙ্খলায় খবরের শিরোনামে চলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৈরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।