সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতিরিক্ত স্ট্রেস বা মানসিক চাপ থেকে বাড়ছে কোভিডে (Covid) আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে। এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘অ্যানালস অফ বিহেভায়োরাল মেডিসিন জার্নাল’-এ (Annals of Behavioral Medicne Journal )।
গবেষকরা জানিয়েছেন, মহামারীর শুরু থেকেই পরিবার, আত্মীয়স্বজন, কর্মস্থল নিয়ে আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তার কারণে বাড়ছিল মানসিক অবসাদ। এভাবে অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভোগার কারণে তাঁরা অনেকেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু আক্রান্ত হওয়াই নয়, তাঁরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও দাবি করা হয়েছে সাম্প্রতিক গবেষণায়।
বর্তমান জার্নালটির প্রধান গবেষক নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ মেডিসিনের অধ্যাপক কবিতা বেধারা (Kavita Vedhara )। সঙ্গে ছিলেন লন্ডনের কিংগস কলেজ ও নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন গবেষক।
[আরও পড়ুন: করোনার ‘যম’ গাঁজার দুই উপাদান! কিন্তু ধূমপান বিপজ্জনকই, দাবি গবেষকদের]
আগেই গবেষকরা জানিয়েছিলেন, মানসিক চাপ ভাইরাল রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে থাকে। মহামারী পরিস্থিতিতে একান্তবাসে থাকার কারণে হাজারও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও গবেষকরা সতর্ক করেছিলেন। বর্তমান গবেষণায় দেখা গেল, যারা অবসাদ তথা অন্য মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তাঁরাই বেশি করে কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন।
১ হাজার ১০০ জনের উপর এই গবেষণাটি চালানো হয়। প্রথম দফায় এপ্রিল ২০২০ ও পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস অবধি বিষয়টি নিরিক্ষণ করা হয়। তারপরেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন কবিতা বেধারা ও অন্যান্য গবেষকরা।
[আরও পড়ুন: করোনামুক্ত হওয়ার কতদিন পর মদ্যপান করা যাবে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?]
অধ্যাপক বেধারা বলেন, “বর্তমান গবেষণার গুরুত্বের দিকটি হল মহামারীর ক্ষেত্রে আমাদের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটিও বেশি করে ভাবতে হবে। আমাদের গবেষণা থেকে বোঝা গেল, মহামারী পরিস্থিতি কেবল গোটা বিশ্বের মানসিক স্বাস্থ্যকেই ব্যহত করছে না, এর ফলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে বহু মানুষের ক্ষেত্রে।”
এটা স্বাভাবিক যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি, তাতে মানসিক চাপ বাড়বে, এ আর বড় কথা কী! যতদিন না সমস্যা কিছুটা মিটছে, চাপ পুরোপুরি কমবে না, এটাও সত্যি। কিন্তু এর পাশাপাশি আরও একটা বড় সত্যি হল, চাপের মধ্যে থেকেই খুঁজে নিতে হবে চাপমুক্তির পথ। না হলে করোনা আবহে লাগাতার উদ্বেগ, ঘুম না হওয়া, ভুল খাবার খাওয়া ও অনিয়মিত জীবনযাপনের হাত ধরে ছোটখাটো যে সমস্ত অসুখ-বিসুখ আগে থেকে ছিল, তাদের প্রকোপও কিন্তু বাড়বে, মন আরও বিপর্যস্ত হবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে খুলে যাবে সব রকম সংক্রমণের দরজা, করোনা সংক্রমণেরও।