অভিরূপ দাস: অবশেষে নজির গড়ে সফলভাবে রোগীর শরীরে ফুসফুস প্রতিস্থাপন (Lung transplant) করা হল সফলভাবে। কলকাতার মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে (Medica Super Speciality Hospital) প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে এই অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা জানান, অপারেশন সফল। তবে জটিল অপারেশনের পর আগামী ৭২ ঘণ্টা রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তারপরই বোঝা যাবে, রোগীর শরীরে কতটা কাজ করছে নতুন ফুসফুস। বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাক্তার কুণাল সরকারের নেতৃত্বে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ঘটনা নয়া ইতিহাস গড়ল বাংলার চিকিৎসা জগতে।
ইতিহাসের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল সোমবারই। মেডিকা হাসপাতাল সূত্রে খবর মিলেছিল, ১০৩ দিন ধরে সেখানে ভরতি বছর ছেচল্লিশের এক রোগী। তাঁর ফুসফুস সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গিয়েছে। গত দু’মাস ধরে একমো (ECMO) সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু সেই একমো সাপোর্টও আর কাজ করছিল না। আর সেই কারণেই পরিবারের সদস্যরা ফুসফুস প্রতিস্থাপনের কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকদের। ফুসফুসের সন্ধান করছিলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: প্রাণহানি ১৪ জনের, নষ্ট ফসল, দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান প্রকাশ নবান্নের]
শেষমেশ গুজরাটের সুরাটে এক রোগীর ব্রেনডেথের (Brain death) খবর পান তাঁরা। তাতেই আশার আলো দেখেন। সেই রোগী এবং হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর ফুসফুসই প্রতিস্থাপনের কথা বলে বৃদ্ধের পরিবার। সেইমতো দু’রাজ্যের চিকিৎসক মহল নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে সুরাট (Surat) থেকে ফুসফুসটি কলকাতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন।
[আরও পড়ুন: পেট কাটা, ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা, পচাগলা দেহ উদ্ধার ঘিরে বাবুঘাটে চাঞ্চল্য]
সোমবার সন্ধেবেলা সুরাট থেকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে রওনা দেয় ফুসফুস। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে অবতরণের পর গ্রিন করিডর করে মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে তা পৌঁছে যায়। এরপর রাতেই ডাক্তার কুণাল সরকারের নেতৃত্বে ৫ জনের চিকিৎসক দল শুরু করে অস্ত্রোপচার। ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় বৃদ্ধের শরীরে সফলভাবে তা প্রতিস্থাপন করেন তাঁরা। তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোগীর শরীরে রক্তক্ষরণ এবং ফাইব্রোসিস কিছুটা চিন্তায় রাখছে তাঁদের। তাই ৭২ ঘণ্টা কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৪৬ বছরের ব্যক্তিকে। তবে এই প্রতিস্থাপন কলকাতায় তো বটেই, গোটা রাজ্যেই প্রথম। সেদিক থেকে এত জটিল অস্ত্রোপচার করে দক্ষিণ কলকাতার এই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল সত্যিই নতুন নজির গড়ল।