সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ভোটের আগে সিঙ্গুরে শিল্পায়নের ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। সিপিএম বিধায়ক তথা বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী থেকে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষরা এই সিদ্ধান্তকে ‘ভাঁওতাবাজি’ বলে মনে করছেন। সিপিএমের অভিযোগ, সিঙ্গুরের জমি নিয়ে কেনাবেচার করছে সরকার। বিজেপির প্রশ্ন, সিঙ্গুরে শিল্প গড়ার সময় কোথায়? এরপরই রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হয়ে যাবে। তখন কাজ কীভাবে হবে?
একুশের ভোটের আগে সিঙ্গুরে (Singur) বিশেষ নজর দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। ২০১১ সালে সিঙ্গুরের যে কৃষি আন্দোলনের পথ ধরে মমতা প্রায় সাড়ে তিন দশকের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই মুখ্যমন্ত্রীই এবার সিঙ্গুরে শিল্প ঘোষণা করলেন। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, সিঙ্গুরের প্রাকৃতিক চরিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেখানে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে উঠবে। ১১ একর জমিতে কাজ হবে, সিঙ্গুর রেলস্টেশনের কাছে জমি ঘেরার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে এই পার্ক গড়ে তুলতে কারও থেকে কোনও জমি অধিগ্রহণ করা হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: আরও বিপাকে কয়লা মাফিয়া লালা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল সিবিআই আদালত]
তাঁর এই ঘোষণার পরপরই বিরোধীরা সমালোচনায় সরব হন। বাম আমলে টাটাদের কারখানার জন্য বরাদ্দ জমি কেনাবেচার কাজে লিপ্ত হয়েছে তৃণমূল। জমি দখলের জন্য বিপুল দর হাঁকছেন মুখ্যমন্ত্রী ও দলের নেতারা। এসব অভিযোগের পাশাপাশি বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakroborty) প্রশ্ন তুলেছেন, সিঙ্গুরে কীভাবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্টি হবে? ভোটের আগে চমক দিতেই মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুরে শিল্প করার কথা বলছেন বলে অভিযোগ তাঁর। সুজনের আরও কটাক্ষ, ”মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুরে সর্ষের বীজ ছড়িয়েছিলেন। পরে দাবি করেন ধান হয়েছে। না হল শিল্প, না হল বেকারের কর্মসংস্থান। সাড়া দেশের কাছে রাজ্যের বদনাম হয়ে গিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের বৈঠকে গরহাজির পুরুলিয়ার চার বিধায়ক, দলের অন্দরে তুমুল জল্পনা]
প্রায় একই সুরে প্রশ্ন তুলেছেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। তাঁর বক্তব্য, ”২০১১এ যখন সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর ৯৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছিল, তখন উনি ওদের বিদায় দিয়েছিলেন। জমিটার এমন অবস্থা যে কৃষি আর হবে না। আজ যখন ফের আরেকটা ভোটের সময় এসেছে, তখন তাঁর হঠাৎ সিঙ্গুরের কথা মনে পড়ল! আর এখানে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হবেই না কখন? কয়েকদিন পর রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হয়ে যাবে। এসব আসলে ভাঁওতাবাজি।” শুক্রবার সকালে শরীরচর্চা করতে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ সিঙ্গুর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন।