নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সিউড়ির কবরস্থানকে (Grave Yard) সাজিয়ে তুলতে আরব থেকে আনা হল খেজুর গাছ। বীরভূমের আবহাওয়ার সঙ্গে এই উন্নত মানের খেজুর গাছ (Dates Trees) ভাল উৎপাদন দিতে পারবে বলে আশা সকলের। তাই কবরখানা সাজানোর মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী, সিউড়ি পুরন্দরপুরে রাস্তার পাশে পাঁচিল ঘেরা কবর স্থানে বসানো হল ২০টি আরবিয়ান (Arab)খেজুর গাছ। জেলা সংখ্যালঘু দপ্তরের তরফে জানান হয়, ভবিষ্যতে কবরস্থানকে শান্তি ও দর্শনীয় স্থান গড়ে তুলতে ওয়াকফ কমিটির সঙ্গে বসে তার রূপায়ণের কাজ চলছে।
রাজ্য সড়কের পাশেই পাঁচিলে ঘেরা কবরস্থান। প্রাকৃতিক জঙ্গল ও গাছ-গাছালিতে ঘেরা এলাকা। ওয়াকফ কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কবরখানার সৌন্দর্যায়নের (Beautification) জন্য আবেদন করা হয়। সেই মোতাবেক প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রেখেই কবরস্থানকে আরও উন্নত করার পরিকল্পনা করা হয়। ওয়াকফ কমিটির পক্ষ থেকে জানান হয়, ‘‘সবই তাঁর সৃষ্টি। গাছে যে পাখ-পাখালি থাকে সেই গাছ নষ্ট না করে, পাখিদের বাসার কোনও ক্ষতি না করে কবর খানাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিতে হবে।’’
[আরও পড়ুন: বেহাল নিকাশির জেরে ফি বছর ৬ মাস ধরে ‘জলবন্দি’, জলযন্ত্রণায় জেরবার মন্দিরতলার বাসিন্দারা]
সেই মতো কবরখানা জুড়ে সিমেন্টের ব্লক দিয়ে রং-বেরঙের পাকা রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। শেষযাত্রায় যাতে সারিবদ্ধভাবে কবর দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা হবে। মাটির অংশে সবুজ ঘাস রোপণ করে দিতে হবে, যাতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কাঁটা না ফোটে। একই সঙ্গে দেশ বিদেশের নানা গাছ-গাছালি লাগিয়ে এলাকাটিকে শহর তথা জেলার মধ্যে আদর্শ কবরখানা তৈরি হবে। তারই প্রাথমিক ধাপে মিরাটের কাছ বীজনগর থেকে আরবি খেজুরের ২০টি চারা ট্রাকে করে সিউড়ি (Suri) আনা হয়েছে। যে গাছের খেজুর শুধু সুস্বাদু নয়, একটা পরম প্রাপ্তি।
[আরও পড়ুন: ইডির নজরে সানি লিওনি! ২০০ কোটি বাজেটের বিয়েতে ‘বিশেষ অতিথি’ হয়েই বিপাকে]
সিউড়ির ওয়াকফ কমিটির সদস্য মাসুদার রহমান জানান, ‘‘শুধু জেলা নয়, কবরস্থানকে আমরা একটা আদর্শ শান্তির জায়গা হিসাবে গড়ে তুলতে চাইছি। সরকারের তরফে সেই পরিকল্পনা মাফিক কাজ হচ্ছে। বোলপুরের (Bolpur) সবুজবনের আবদুস সেলিম আরব থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে ২০ টি খেজুর গাছ এনে এই বর্ষায় লাগিয়েছেন।’’ কমিটির অন্য সদস্য কাজি ফজরুদ্দিন জানান, ‘‘৩৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কবরখানাকে সাজিয়ে তোলা হবে। তার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলছে।’’ আবদুস সেলিম সাহেব জানান, ‘‘টিস্যু কালচারের মাধ্যমে আমাদের দেশেই এই আরবি খেজুর গাছের চার তৈরি হয়েছে। দিল্লি হয়ে ট্রাকে করে বিশেষ পদ্ধতিতে চারাগুলি সিউড়ি আনা হয়। আশা করছি এক বছরের মধ্যে খেজুর ফলবে। তবে এর যে পরিচর্যা করার দরকার তা সময়মতো হয়নি। আমি যে পরিকল্পনা করেছিলাম, সরকারি বাধ্যবাধকতায় তা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ওখান থেকে আমি পিছিয়ে এসেছি।’’