নন্দন দত্ত, সিউড়ি: এবার রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ করে সমালোচিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সিউড়ির পুরন্দরপুরে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বসলেন। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি বহু বেআইনি কাজ করছেন। শুভেন্দুর কাছে সেসব তথ্য রয়েছে বলেও দাবি করেছেন। রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে ‘ঝগড়া-ভালবাসার বিষয়’ রয়েছে, এই সুরে কটাক্ষ করতে শোনা গেল তাঁকে। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের প্রতি বিরোধী দলনেতার এহেন নজিরবিহীন আক্রমণে শুরু হয়েছে সমালোচনা।
বৃহস্পতিবার সিউড়ির (Suri) পুরন্দরপুরে এক কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। গত সপ্তাহে সেখানে এক সাধুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে শোরগোল পড়েছিল। তাঁর মৃত্যুতে আজ শ্রদ্ধাঞ্জলি যাত্রার আয়োজন করেন ভক্তরা। তাতে যোগ দিতেই সিউড়ি যান শুভেন্দু। শ্রদ্ধাঞ্জলি যাত্রার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল সম্পর্কে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। শুভেন্দুর কথায়, ”সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অনেক বেআইনি কাজ করেন। আমার কাছে তথ্য আছে। রাজ্যপালকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চাই না। রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে অনেকভাবে সাহায্য করছেন। তাঁদের মধ্যে একটা ঝগড়া-ভালবাসার সম্পর্ক আছে।”
[আরও পড়ুন: ইডির আবেদনে সাড়া, ১৯ জুন পর্যন্ত হেফাজতে শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার কুন্তল ঘোষ]
বিরোধী দলনেতার আরও বক্তব্য, ”আমি গভর্নরের উপর নির্ভর করে রাজনীতি করি না। উনি কিছু কিছু বেআইনি কাজ করছেন। যেমন নির্বাচন কমিশন বীরেন্দ্রকে সরিয়েছে, তারপরে উনি বীরেন্দ্রকে তথ্য কমিশনার করে দিয়েছেন। লোকায়ুক্ত পদে অসীম রায়ের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন। আমি অন্যায় দেখলে আদালতে যাবই।” তাঁর এই আক্রমণকে অবশ্য তেমন গুরুত্ব দেননি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose)। তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ”উনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। মতপ্রকাশের অধিকার তাঁর আছে, তিনি সেটাই করেছেন।”
[আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ বন্ধ নিয়ে দেবশ্রী-সুকান্তর দ্বন্দ্ব! বিরোধিতা করেও বন্ধে সায় বিজেপি রাজ্য সভাপতির]
তবে রাজ্যের শাসকদল তীব্র ভাষায় এর নিন্দা করেছেন। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ”যে ভাষায় শুভেন্দু আজ রাজ্যপালকে আক্রমণ করল, তা সমস্ত শিষ্টাচারের ঊর্ধ্বে, সৌজন্যের বিরুদ্ধে। আসলে শুভেন্দুদের একটা প্রতিহিংসার রাজনীতি রয়েছে। ওদের জনগণের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। সবটাই ওদের করে দিতে হয়। জগদীপ ধনকড়ের সময় তো এই শুভেন্দুরাই দিনরাত পার্টি অফিসের মতো রাজভবনে ঘুরে বেড়াত। এখনকার রাজ্যপাল কিছু বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে একমত হচ্ছেন, কিছু বিষয়ে হচ্ছেন না। সেটা শুভেন্দুদের সহ্য হচ্ছে না। ও কী ভেবেছে কী? রাজ্যপাল পদ কি অধিকারীদের প্রাইভেট লিমিটেড?”