shono
Advertisement

গরিবের হকের পাওনা ঠেকাতে অমিত শাহ ও নির্মলার দরবারে শুভেন্দু!

'বিজেপি বাংলা বিরোধী দল', খোঁচা তৃণমূলের।
Posted: 09:23 PM Feb 05, 2024Updated: 09:23 PM Feb 05, 2024

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: রাজ্যের পাওনা টাকা দেবেন না। অমিত শাহ ও নির্মলা সীতারমনের কাছে দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। বাংলার বঞ্চিত মানুষের হকের পাওনা আটকাতে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার অর্থ রাজ্যকে যাতে না দেওয়া হয় সেই আর্জি জানান। পাশাপাশি আরও একধাপ এগিয়ে রাজ্যের সরকার যাতে কোনও ঋণ না পায় সেই ব্যবস্থা করার আবেদন জানান। যদিও ইতিমধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকারই গরিব মানুষের পাওনা মিটিয়ে দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

এদিকে শুভেন্দুর দিল্লি সফরকে কেন্দ্র করে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরেকবার প্রকাশ্যে চলে আসে। সোমবার সংসদে অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বিরোধী দলনেতা রাজ্যসভার ভোটে নিজের পছন্দের এক মহিলা প্রার্থীর নাম সুপারিশ করেন বলে সূত্রের খবর। শুভেন্দুকে আক্রমণ শানান তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, “বিরোধী দলনেতার আচরণ রাজ্যবিরোধী। আসলে বিজেপি তৃণমূল বিরোধী নয়, বাংলার বিরোধী।”

[আরও পড়ুন: ‘অধীরবাবুকে দেখে কষ্ট হয়’, কংগ্রেসের অন্তর্কলহে ‘ইন্ধন’ কৌশলী মোদির!]

বাংলার সরকার যাতে আর কোনও ঋণ না পায় আপ্রাণ চেষ্টা তিনি করবেন। আগেই জানিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে দেখা করে তিনি যে বাংলার ঋণ না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তা জানিয়েছেন শুভেন্দু নিজেই। যদিও অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে তা বলতে চাননি তিনি। সূত্রের খবর, দ্রুত সিএএ লাগু করার দাবি জানানোর পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গ থেকে এক মহিলাকে রাজ্যসভায় পাঠানোর আর্জি জানান। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করেছেন যে, রাজ্য সরকার নতুন করে ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ চাইতে পারে। সাত তাড়াতাড়ি দিল্লি গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কার্যত নালিশ করলেন। শুভেন্দু জানিয়েছেন, আগে নেওয়া ঋণের টাকার যথাযথ হিসাব না দিলে বাংলার সরকারকে যাতে টাকা না দেওয়া হয়, সেই আর্জি তিনি জানিয়েছেন কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রীকে। “কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের কাছে আমি বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেছি। ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে যাতে কেন্দ্র তদন্ত করে সেই আর্জি জানিয়েছি।” পাশাপাশি জিএসটির টাকা নিয়েও বাংলায় দুর্নীতি হচ্ছে বলে অর্থমন্ত্রীর কাছে নালিশ ঠুকেছেন।

শুভেন্দু দাবি করেছেন, দেশের দুটি রাজ্যে কেন্দ্র থেকে জিএসটি বাবদ কোনও অডিট ছাড়া টাকা পাঠানো হচ্ছে। সেই দুটি রাজ্য কেরল এবং পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপি নেতার কথায়, “পশ্চিমবঙ্গ দেশের একমাত্র রাজ্যে যেখানে ২০১৭ সালে জিএসটি লাগু হওয়ার পর থেকে অডিট হয়নি। তাই দাবি করেছি অডিট হওয়ার পর যাতে বাংলাকে টাকা দেওয়া হয়।” বিজেপি বিধায়কের আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে যে টাকা রাজ্যে পাঠানো হয় তা দিয়ে সরকারি অফিসের ইলেকট্রিক বিল দেওয়া হয়েছে। এর মানে কেন্দ্রের টাকা রাজ্য সরকার নিয়ে নিচ্ছে। শুধু একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনা মিলিয়ে কেন্দ্রের কাছে বাংলার বকেয়া পাওনা রয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এই দুই প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে অন্তত ডজন খানেক চিঠি পাঠিয়েছিলেন শুভেন্দু। তার পর দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে কয়েকবার দেখা করেন তিনি।

[আরও পড়ুন: লোকসভায় কত আসন পাবে বিজেপি? জানিয়ে দিলেন ‘আত্মবিশ্বাসী’ মোদি]

শুভেন্দুর নালিশ প্রসঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বিজেপি বাংলা বিরোধী একটি রাজনৈতিক দল শুভেন্দুর বক্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট। এই মনোভাবের জন্য ভবিষ্যতে বাংলায় বিজেপিকে ভুগতে হবে।” বিরোধী দলনেতার আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। জানান, “বিরোধী দলনেতার উচিৎ ছিল অর্থমন্ত্রীকে বলা যে রাজ্যের গরিব মানুষের পাওনা অর্থ আটকে রাখবেন না। প্রয়োজনে আমরা সর্বদলীয় প্রতিনিধি আসবো যাতে রাজ্য তাদের অর্থ পায়। রাজনৈতিক স্বার্থেই কি শুভেন্দু এমন আচরণ করছেন?” এদিন অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করে সিএএ চালু করার আবেদন জানান কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement