কৃষ্ণকুমার দাস: নিজেই ঘোষণা করেছিলেন, ১৯ তারিখ রামনগরে ‘মেগা-শো’র কথা। আমজনতা থেকে রাজনৈতিক মহল, সকলের নজর ছিল শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikary) সেই সভার দিকে। কোনও বড় ঘোষণা করবেন কি না, কী বার্তাই বা দেবেন – এসব নিয়ে বিস্তর জল্পনা চলছিল। সেসবের অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে রামনগরের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী যা বললেন, তা নিতান্ত কম ইঙ্গিতপূর্ণ নয়। সমবায় মঞ্চ থেকে তিনি বললেন, ”আমি একটি দলের প্রাথমিক সদস্য, মন্ত্রিসভারও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে তাড়াননি, আমিও দল ছাড়িনি।” তবে এসব বললেও অরাজনৈতিক সভার বক্তব্যে কোথাও তৃণমূলের নাম উল্লেখই করলেন না রাজ্যের পরিবহণ ও সেচদপ্তরের মন্ত্রী।
সম্প্রতি এমন বেশ কিছু অরাজনৈতিক সভা করছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিশেষত নন্দীগ্রাম দিবসে তাঁর সভার পালটায় তৃণমূলের একাধিক সভা এবং সেখান থেকে নানা তাৎপর্যপূর্ণ বার্তায় এই গুঞ্জন জোরদার হয়েছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ভরসাযোগ্য সেনাপতির কি তবে তৃণমূলে আস্থা উঠে গেল? তিনি কি নতুনভাবে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করতে চলেছেন? বৃহস্পতিবার রামনগরের সভায় সেই জবাবই তিনি দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এদিন তাঁর সভায় প্রায় ২০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। তা দেখিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য, ”অরাজনৈতিক এই সমবায়ের মঞ্চে ২০ হাজার মানুষের সমাগম। এটা একদিনে হয় না, এক দশক ধরে যুক্ত থাকতে হয়। গোটা দেশেও এমন কোনও নজির নেই।”
[আরও পড়ুন: সরকারি নির্দেশ, করোনা আবহে আগামী সপ্তাহ থেকে খুলছে রাজ্যের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি]
দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল বেশ কয়েকমাস ধরেই। বহু দলীয় সভায় তাঁকে দেখা যায়নি। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকও নানা অজুহাতে তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন বলে দলের অন্দরে গুঞ্জন। এও শোনা গিয়েছিল, টিম পিকে-র কারণেই শুভেন্দু দলের উপর খানিকটা ক্ষুব্ধ। উলটে নিজে অনেক অরাজনৈতিক ব্যানারে সভা, সম্মেলন করে রাজ্য মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শুভেন্দু অধিকারী বারবার নিজের জননেতার ইমেজ তুলে ধরছেন। তাঁর সাম্প্রতিক কার্যকলাপের জেরে গুঞ্জন জোরদার হয়, তবে কি দল ছেড়ে বিজেপিতে পা বাড়াচ্ছেন তিনি? তারই জবাবে শুভেন্দুর এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য। তবে একবারও তৃণমূলের নাম না করে জল্পনাও খানিক জিইয়ে রাখলেন।
[আরও পড়ুন: ভয়াবহ বিস্ফোরণ মালদহের প্লাস্টিক কারখানায়, ঘটনাস্থলেই মৃত ৫]
রামনগরের সভার আগে এদিন ইন্দিরা গান্ধীর জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর ছবিতে মাল্যদান করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এনিয়েও ফিসফাস শুরু হয়। তা কানে পৌঁছনোয় সভা থেকে শুভেন্দু জানান, ইন্দিরা গান্ধী দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, একজন জননেত্রী। তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো স্বাভাবিক। এর মধ্যে যাঁরা অন্য কিছু খোঁজার চেষ্টা করছেন, তাঁরা ভুল করছেন।