কৃষ্ণকুমার দাস: ‘আর একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়।’ বুধবার দুপুরে সৌগত রায়কে এসএমএস করে এমনটাই জানিয়ে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। অন্তত সূত্র মারফত তেমনটাই খবর।
এ প্রসঙ্গে সৌগত রায় বলেন, “বৈঠকে যা হয়েছে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে আপনাদের জানিয়েছিলাম। মন পরিবর্তন করলে তাঁর সিদ্ধান্ত, তিনিই সংবাদমাধ্যমে জানাবেন।আমি কিছু বলব না।” শুভেন্দুর বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিয়েছেন। দলের তরফে পরবর্তী পদক্ষেপ কী? তাও এখনও স্পষ্ট নয়।
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছিল। সম্পর্কের বরফ গলাতে বারবার কথা বলছিলেন সৌগত রায়। এমনকী, মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-পিকে-সৌগত রায়ের সঙ্গেও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। তারপরে দলের তরফে জানানো হয়, “সমস্যা মিটে গিয়েছে। শুভেন্দুবাবু দলের সঙ্গেই রয়েছেন।” এরপর আচমকাই বুধবার দুপুরে ছন্দপতন।
[আরও পড়ুন : বক্তব্য রাখার কথা ছিল মমতার, শেষ মুহূর্তে স্থগিত হয়ে গেল অক্সফোর্ডের সেই বিতর্কসভা]
সূত্রের খবর. এদিন পাঠানো এসএমসে প্রথমেই তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন শুভেন্দুবাবু। জানিয়ে দেন ‘আর একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়।’ একইসঙ্গে ক্ষোভের একাধিক কারণও তুলে ধরেছেন তিনি। বৈঠকের শেষে দলের তরফে জানানো হয়েছিল শুভেন্দুবাবু তৃণমূলেই আছেন। এতেই আপত্তি শুভেন্দু অধিকারীর।
সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর ক্ষোভ, অভিযোগ, সাংগাঠনিক ক্ষেত্রে আপত্তির সমাধান হওয়া এখনও বাকি। তা নিয়ে সবেমাত্র আলোচনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই কীভাবে দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল সমস্ত সমস্যা মিটে গিয়েছে? এ প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। এমনকী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-পিকেকে নিয়েও তাঁর ক্ষোভ রয়েছে বলে খবর। সৌগত রায়কে করা এসএমএসে এ সমস্ত কথাই তুলে ধরেছেন শুভেন্দুবাবু।
[আরও পড়ুন : ‘রাজ্যের উন্নয়নে বাঙালি থেকে অবাঙালিদের অবদান বেশি’, বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে দিলীপ]
এদিকে এই মেসেজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানান তৃণমূল সাংসদ। ইতিমধ্যে দলের অন্দরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। উলটো দিকে শুভেন্দু অধিকারীর এই অবস্থান সামনে আসার পর নতুন করে উজ্জিবীত বিজেপি শিবির। ইতিমধ্যেই মুকুল রায়ের কটাক্ষ, “সৌগতদার বয়স হয়েছে। কাল কী হয়েছে বুঝতে ভুল করেছেন।” সবমিলিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বৈঠকের মাত্র ১৪ ঘণ্টার মধ্য চিত্রটা আবার পালটে গেল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।