সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোটা বিরোধী আন্দোলনে (Anti Reservation Movement) রক্তাক্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল শয়ে শয়ে পড়ুয়া। ইতিমধ্যেই এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে পড়ুয়াদের হোস্টেল থেকে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হোস্টেল ছাড়তে শুরু করেছে আতঙ্কিত ছাত্রছাত্রীরা। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের পড়ুয়াদের জন্য প্রাণ কাঁদছে 'বিজয়া' স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের।
দিন কয়েক আগেই যাদবপুরের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনা অবলম্বনে একটি সিরিজে অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে 'বিজয়া' সিরিজটি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের উপর হওয়া শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের নগ্ন ছবি দেখিয়েছে এই সিরিজ। এবার বাংলাদেশের পড়ুয়াদের কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই শান্তির বার্তা দিলেন অভিনেত্রী। বলছেন, "অস্থির লাগছে। আমিও তো সন্তানের জননী।"
দাউদাউ করে জ্বলছে ফ্লাইওভার
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, "প্রায় এক মাস হল আমি নিজের দেশে নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খবরের চ্যানেলে তৃতীয় বিশ্বের কোনও খবরই বিশাল একটা চলে না। আর আমি খুব একটা ফোনের পোকা নই, তাই এত খারাপ একটা খবর কানে আসতে দেরি হল। এই তো কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ গেলাম, খুব ইচ্ছে ছিল জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার। চারুকলা যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, জীবনের একটা স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। প্রতিবার আসি, ব্যস্ততায় যাওয়া হয় না। মাও খুব যেতে চাইতেন বাংলাদেশ। নিয়ে যাওয়া হয়নি, কিন্তু আজ একটা ভিডিও দেখলাম, গুলির ধোঁয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আক্রান্ত। ছাত্র বয়স গিয়েছে সেই কবে, তবে জাহাঙ্গীর নগর আর আমার যাদবপুর খুব কাছাকাছি। কাঠগোলাপের গাছগুলিও কেমন একরকম। একরকম আকাশের মেঘগুলিও। কেবল আজ ওখানে বারুদের গন্ধ।"
শঙ্খ ঘোষের কবিতার লাইন ধরেই অভিনেত্রীর সংযোজন, "ময়দান ভারী হয়ে নামে কুয়াশায়/ দিগন্তের দিকে মিলিয়ে যায় রুটমার্চ/ তার মাঝখানে পথে পড়ে আছে ও কি কৃষ্ণচূড়া?/ নিচু হয়ে বসে হাতে তুলে নিই তোমার ছিন্ন শির, তিমির।" এমন এক আপ্যায়ণ প্রিয় জাতি দেখিনি, খাবারের নিমন্ত্রণ যেন শেষ হতেই চায় না, অমন সুন্দর করে সারা রাস্তা জুড়ে ভাষার আলপনা আর কোথায় দেখব? নয়ন জোড়ানো দেওয়াল লেখা? এ বোধহয় মুক্তিযুদ্ধের শপথ নেওয়া একটা জাতির পক্ষেই সম্ভব। আজ, অস্থির লাগছে। আমিও তো সন্তানের জননী। আশা করব বাংলাদেশ শান্ত হবে। অনেকটা দূরে আছি, এই প্রার্থনা টুকুই করতে পারি। অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো- সেই আমাদের আলো। আলো হোক
ভালো হোক সকলের।"
[আরও পড়ুন: ‘ছোটবেলায় দেবের মতো বর চাইতাম’, বলছেন ‘পাগলু’ ফ্যান রাজন্যা]
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ এখন বিষয়টিকে 'সরকার বিরোধী আন্দোলন' হিসেবে বিবেচনা করছে। বিষয়টিকে তারা শুধুই কোটা সংস্কার আন্দোলন হিসেবে দেখছে না। তাঁদের কথায়, এই ছাত্র আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিনএনপি। এমতাবস্থায় হাসিনা সরকারের পক্ষে সওয়াল করেছেন পদ্মাপারের কন্যা তথা অভিনেত্রী, সমাজকর্মী রফিয়াত রশিদ মিথিলা। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর তরফে তাঁকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে পাওয়া যায়নি। তবে অভিনেত্রীর সোশাল মিডিয়া পোস্টই কার্যত বলে দিচ্ছে, যে তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ সরকারের প্রস্তাবিত মুক্তিযোদ্ধার উত্তরসূরীদের 'কোটা'র পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন। মিথিলা যে পোস্ট শেয়ার করেছেন, তাতে লেখা- "সরল প্রশ্ন করছে শহিদের মা- তোরা মোর ছাওয়াক চাকরি না দিবু, না দে! কিন্তু মারলু ক্যানে?" সেই সঙ্গে জবাবদিহিও চাইলেন মিথিলা। আরেকটি ইনস্টা স্টোরিতে বাংলাদেশের পতাকার ছবির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া লেখা- "বল বীর চির উন্নত মম শির।"