সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খোঁজ মিলল নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের। সোয়াইন ফ্লু’এর পর সোয়াইন করোনা ভাইরাস (Swine corona virus)। সম্প্রতি এক গবেষণার রিপোর্ট বলছে, শূকরের দেহ থেকে এই ধরনের করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন মানুষও। এর বৈজ্ঞানিক নাম – SADS-CoV, যা কিনা SARS-CoV-2’রই তুতো ভাই। এই জীবাণুর গতিবিধি সম্পর্কে বিশদে জানতে চলছে আরও গবেষণা। তবে মহামারী আবহে বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক তথ্যে উদ্বেগ কয়েকগুণ বাড়ল, তা বলাই বাহুল্য।
এতদিন সংশয় ছিল, করোনা ভাইরাস অর্থাৎ SARS-CoV-2 কি মানুষের শরীর থেকে পশুদেহে সংক্রমিত হচ্ছে? নাকি উলটোটা? চলতি বছরের মাঝামাঝিতে হংকং, আমেরিকায় বাঘ এবং পোষ্য কুকুরের মৃত শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলায় সেই প্রশ্ন আরও জোরদার। এ নিয়ে গবেষণায় উঠে এসেছিল যে মানবদেহ থেকেই প্রাণীদের শরীরে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ ঘটেছে। কিন্তু এবার ঠিক উলটপুরাণ। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, SADS-CoV বা সোয়াইন করোনা ভাইরাসটি শূকরের মতো প্রাণীর দেহ থেকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে মানুষের শরীরে। ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলাইনার গবেষকরা জানাচ্ছেন, সাধারণ করোনা ভাইরাস বা COVID-19’এর মতো এই জীবাণুর আক্রমণে শরীরে শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়ার মতো লক্ষ্ণণ দেখা যায় না। এর লক্ষ্ণণ প্রবল ডায়রিয়া, যা একেবারে কাবু করে ফেলে কোনও প্রাণীকে।
[আরও পড়ুন: সাবধান! মোবাইলের স্ক্রিন, নোটে ২৮ দিন বাঁচতে পারে করোনা ভাইরাস, দাবি গবেষকদের]
সোয়াইন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে আরও বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালে চিনে বাদুড় এবং শূকরের মধ্যে নাকি এর সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল। যার জেরে পর্ক (Pork) উৎপাদন মুখ থুবড়ে পড়েছিল সেখানে। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে পাশের দেশগুলোতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু জীবাণুটি যে সোয়াইন করোনা ভাইরাস বা SADS-CoV, তা বোঝা যায়নি। এটি আলফা করোনা ভাইরাস, যেখানে SARS-CoV-2 বিটা করোনা ভাইরাস। তাই তুতো ভাই হলেও, এদের দু’জনের আক্রমণের ধরন এক নয়।
[আরও পড়ুন: করোনা আবহে সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাব, বাড়ছে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা]
এখন এই ভাইরাসটির প্রভাব মানবদেহে কীরকম, তা খুঁজতে গিয়ে গবেষকরা দেখেন, শ্বাসযন্ত্রে নয়। সোয়াইন করোনা ভাইরাস মানুষের পরিপাক তন্ত্রে সবচেয়ে আগে আঘাত করে। লিভার এবং ফুসফুসে বাসা বেঁধে এই দুই অঙ্গের ক্ষতি করতে থাকে। গবেষকদের প্রাথমিক ধারণা, নোভেল করোনা ভাইরাসের মতো সোয়াইন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠেনি মানব শরীরে। তাই একবার কোনও মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে, তা বংশবিস্তার করে ফেলে দ্রুত। তবে শূকরদের দেহ থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণের রাস্তা নিয়ে এখনও ধন্দে গবেষকরা। আপাতত লক্ষ্য একটাই, সোয়াইন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখে আগে প্রাণীদের রক্ষা করা।