স্টাফ রিপোর্টার : শেষবার আন্তর্জাতিক আসরে খেলে ফেলেছেন প্রায় অর্ধ যুগ আগে। তবে নিজের থেকে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা বিদেশি প্রতিপক্ষকে হারানোর কৌশল এখনও ভোলেননি মৌমা দাস। চল্লিশ বছর বয়সেও আল্টিমেট টেবল টেনিসের আসরে ঝড় তুলছেন বাংলার এই প্যাডলার।
প্রথমে মা হওয়া। তারপর করোনার ধাক্কা। পরপর চ্যালেঞ্জ সামলে জাতীয় সার্কিটে সফলভাবেই ফিরেছেন মৌমা। সেই সুবাদেই নিয়মিত ডাক পাচ্ছেন টেবল টেনিসের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ইউটিটি-তে। গতবার অবশ্য ইউ মুম্বার স্কোয়াডে ছিলেন। তবে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। এবার নিলামে তাঁকে দলে নিয়েছে চেন্নাই লায়ন্স। আর কাকতালীয়ভাবে পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধেই এবারের ইউটিটি-তে নিজের প্রথম ম্যাচটা খেললেন মৌমা। শুধু খেলাই নয়, স্প্যানিশ প্যাডলার মারিয়া শিয়াওকে হারালেন ১১-১০, ১১-৮, ১০-১১ গেমে। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ৬৫ নম্বরে থাকা প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে বেশ খুশি মৌমা। চেন্নাই থেকে ফোনে বলছিলেন, “আমার বয়স এখন ৪০। ফলে আগের মতো এখন কোনও কিছুই সহজ নয় আমার কাছে। তারপরও মারিয়ার মতো প্রতিপক্ষকে হারাতে পেরে ভালো লাগছে। আমরা ম্যাচটা জিততে পারলে আরও ভালো লাগত। তবে ইউটিটি-র নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটা গেম জয়ের প্রভাব পয়েন্ট টেবলে পড়ে। তাই আমি নিজের লড়াইটা জিততে পেরে খুশি।” ম্যাচটা ৭-৮ পয়েন্টে হেরেছে চেন্নাই।
[আরও পড়ুন: টুর্নামেন্ট এক, ট্রফি তিন, কেন এই নিয়ম ডুরান্ডে?]
দীর্ঘদিন টেবল থেকে দূরে থাকায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিশেষ যাওয়ার সুযোগ নেই মৌমার। তাই ইউটিটি-র মতো আসরে নিজের প্রতিভা প্রমাণ করতে মুখিয়ে থাকেন তিনি। যে আসরে প্রায় অধিকাংশ প্যাডলারের বয়সের থেকে মৌমা বেশিদিন টেবল টেনিস খেলছেন। এখনও লড়াইয়ের প্রেরণা কী? মৌমার জবাব, “আমি এখনও জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখি। এখন যা নিয়ম, তাতে আমার কাজটা সহজ নয়। তবে আমি নিজের মতো করে চেষ্টা করে যেতে চাই।” আর এই লক্ষ্য পূরণে একটাই দুঃখ মৌমার। তা হল একরত্তি মেয়ের থেকে দূরে থাকাটা। বলছিলেন, “ম্যাচের পর বাড়িতে কথা হল। শুনলাম টিভিতে আমাকে দেখতে পেয়ে মেয়ে এসে স্ক্রিনেই চুমু দিয়েছে। ওর জন্য মনটা খারাপ হয় মাঝে মাঝে।” তবে পরিবার যেভাবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে, সেটাই মনের জোর বাড়িয়ে দিয়েছে মৌমার।