চন্দ্রজিৎ মজুমদার ও নন্দন দত্ত: গত কয়েকদিন ধরে শিরোনামে বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha)। পৈতৃক সম্পত্তি প্রচুর থাকলেও, গত কয়েকবছরে বিধায়কের উত্থান চোখে পড়ার মতো। একের পর এক জমি, বাড়ি। যা তদন্তকারীদের চোখও কপালে তুলছে।
মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হলেও অনুব্রতর বীরভূমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে জীবনকৃষ্ণ সাহা। মুর্শিদাবাদের একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন বিধায়ক। এরপর ১৯৯২ সালে সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে ইতিহাস নিয়ে স্নাতক হন। স্নাতকোত্তর পাশ করেন বিশ্বভারতী থেকে। হস্টেলে থাকতেন। জীবনকৃষ্ণের বাবার বরাবরই প্রচুর সম্পত্তি ছিল, বিঘার পর বিঘা জমি, একাধিক বাড়ি, তেলের কল-আরও কত কী। তবে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর ছেলে জীবনকৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তবে বিধায়কের মায়ের প্রতিপত্তি কিছু কম ছিল না। প্রায় তিন বিঘা জমির উপর বাড়ি, লরির ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা সবই ছিল তাঁর মায়ের নামে। ফলে ছোট থেকেই দুহাতে টাকা উড়িয়েছেন জীবনকৃষ্ণ। পরবর্তীতে একটি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু বেআইনি প্রতিবন্ধী কার্ড চক্রে নাম জড়িয়ে পড়ায় সেই চাকরি ছেড়ে দেন।
[আরও পড়ুন: দেড়দিন পর পুকুর থেকে উদ্ধার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের মোবাইল, দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছতে মরিয়া CBI]
বর্তমানে একটি স্কুলের শিক্ষক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তবে বিধায়ক হওয়ার পর স্কুলে যেতে হয় না। স্থানীয় সূত্রে খবর, বরাবরই অসৎ উপায়ে উপার্জনে ঝোঁক ছিল বিধায়কের। গত কয়েকবছর কার্যত প্রতিদিন চাকরির জন্য টাকা নিয়ে বিধায়কের বাড়িতে লাইন দিত বহু মানুষ। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রচুর সম্পত্তি কিনেছেন জীবনকৃষ্ণ। কান্দিতে রয়েছে একটি রাইস মিল। রয়েছে ৪ বিঘে জমি। একাধিক জমি রয়েছে, যেগুলির টাকা দেওয়া হলেও রেজিস্ট্রি হয়নি। কান্দি হাই স্কুলের পিছনে রয়েছে বিধায়কের একটি পুকুর ও গ্যাসের গোডাউন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মুর্শিদাবাদের কৌশিক ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। তাঁর বাড়ির আশেপাশে কম করে ৩৫ বিঘা জমি রয়েছে বিধায়কের।
শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, বীরভূমেও প্রচুর সম্পত্তি কিনেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। সাইথিয়া পুরসভা এলাকায় ৫ কাঠা জায়গা রয়েছে জীবনকৃষ্ণের। শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের আয়ত্তে ৪ কাটা জায়গা আছে। সাঁইথিয়া এলাকায় জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে একটি ব্যাংক চলে। লাউতোর এলাকায় মোট ২৪ কাঠা জায়গা বিধায়কের নামে। সাঁইথিয়া তালতলা মোড়ে একটি রাইস মিল রয়েছে। এছাড়া সাইথিঁয়া শহরে পৈতৃক বাড়ি মিলিয়ে ৪ টি বাড়ি জীবনকৃষ্ণের। এখনও পর্যন্ত এই যা সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে তাঁর দাম ২০০ থেকে তিনশো কোটি। এছাড়াও বেনামে বিধায়কের প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে বলেই অনুমান।