shono
Advertisement

‘আমাকেও মেরে ফেলো’, কাতর আর্তি হায়দরাবাদ এনকাউন্টারে খতম অভিযুক্তের স্ত্রীর

স্বামীর মৃত্যুস্থলেই মেরে ফেলার কাতর আর্তি জানিয়েছেন অভিযুক্তের স্ত্রী। The post ‘আমাকেও মেরে ফেলো’, কাতর আর্তি হায়দরাবাদ এনকাউন্টারে খতম অভিযুক্তের স্ত্রীর appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:52 AM Dec 07, 2019Updated: 08:52 AM Dec 07, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ছ’মাস আগেই বিয়ে হয়েছে। তার মধ্যেই সংসারে নেমে এল বিপর্যয়। এক তরুণী পশুচিকিৎসককে গণধর্ষণ ও পুড়িয়ে হত‌্যায় অভিযুক্ত স্বামী। গ্রেপ্তার হয়ে পুলিশ হেফাজতে। তারপর শুক্রবার সকালে হঠাৎ ফোন। ভেঙে চুরমার হয়ে গেল রেণুকার সব স্বপ্ন। এনকাউন্টারে মারা গিয়েছে তাঁর স্বামী ২০ বছরের চেন্নাকেশাভুলু। তারপর থেকে কিশোরী বধূকে সামলে রাখাই দায়। শুধুই বিলাপ করছেন, “কেন মারলে আমার স্বামীকে? আমার সংসার ভাঙলে কেন? যেখানে ওকে নিয়ে গিয়ে মেরেছো, আমাকেও সেখানে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলো।” শোকের বহিঃপ্রকাশ নেই। স্তব্ধ মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফের মা। ছেলের এই পরিণতি মানতে পারছেন না অভিযুক্ত জল্লু শিবার বাবা জল্লু রামাপ্পা।

Advertisement

মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন ও চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু হায়দরাবাদের তরুণী পশুচিকিৎসকের গণধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত এই চারজনকে শুক্রবার সকালে এনকাউন্টারে খতম করে সাইবারাবাদ থানার পুলিশ। তরুণী চিকিৎসকের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে যেমন জ্বলে উঠেছিল দেশ, চার অভিযুক্তের এনকাউন্টারের পর তেমনই স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছে সর্বত্র। মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে অভিযুক্তদের পরিবারের তরফেও। মৃত সন্তানের শোকে কেঁদেছেন মা, আবার কোনও শোকাতুর বাবা বুকে পাথর চেপেই বলেছেন, কতজন তো ধর্ষণ-খুন করে এখনও বেঁচে রয়েছে। সবাইকে তো এভাবে মেরে ফেলা হয় না।

“কী করেছে আমার স্বামী, কেন মারলে ওকে,” চেন্নাকেশাভুলুর বাড়ির বাইরে দাঁড়ালেই কানে আসছে এই আর্তনাদ। কখনও শোনা যাচ্ছে চাপা রোষ, “আমার স্বামীকে যারা মারল, তাদের মেরে ফেলুন।” আবার কখনও কানে আসছে অসহায় আর্তি, “আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। পুলিশ আমাকেও মেরে ফেলুক।” মাত্র ছ’মাস আগেই বিয়ে হয়েছে তাঁদের। নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই তাঁর। স্বামী যে কোনও মেয়ের এমন সর্বনাশ করতে পারে, সেটাও মানতে রাজি নন তিনি। চেন্নাকেশাভুলুর স্ত্রীর কথায়, “পুলিশ আমাকে ঠকিয়েছে। বলেছিল তদন্তের পর স্বামীকে ফিরিয়ে দেবে। গতকাল রাতেও জানতাম, স্বামী ফিরে আসবে। আজ সকালে শুনি ওকে মেরে ফেলা হয়েছে। অন্যায়ভাবে আমার স্বামীকে মারা হয়েছে। আমি ন্যায় চাই। স্বামীকে ছাড়া বাঁচব না।” প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, চেন্নাকেশাভুলু কিডনির অসুখে ভুগছিল।

ধর্ষণে অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফের বাড়ির বাইরে সকাল থেকে মেলা লোক। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীদের ভিড়। বাড়ির দাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আরিফের মা। “সকালে পুলিশের ফোন এল। ওরা বলল ছেলেকে মেরে ফেলেছে। এনকাউন্টারে মরেছে আরিফ। আমার ছেলে চলে গিয়েছে।” শোকে পাথর আরিফের বাবা। আগে বলেছিলেন, ছেলে দোষী হলে উপযুক্ত শাস্তি হোক। শুক্রবার বলেছেন, তদন্ত শেষ হয়নি, প্রমাণিত হয়নি তাঁর ছেলেই ওই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষী। তাহলে কেন মারা হল ছেলেকে! আরিফের প্রতিবেশী ইব্রাহিমের দাবি, এই এনকাউন্টারের পুরোটাই সাজানো। “ছেলেকে হারিয়েছি কোনও আফসোস নেই। দোষী শাস্তি পেয়েছে। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রেও এমনটাই হওয়া উচিত। অনেকেই ধর্ষণ-খুন করে বেঁচে রয়েছে। তাদের তো এভাবে মেরে ফেলা হয় না। তাদের ক্ষেত্রে এমন শাস্তি হয় না কেন,” বলেছেন জল্লু শিবার বাবা জল্লু রামাপ্পা।

[আরও পড়ুন: থেমে গেল লড়াই, হাসপাতালে মৃত্যু উন্নাওয়ের অগ্নিদগ্ধ নির্যাতিতার]

জল্লু নবীনের মামাও ঠিক একই কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “এনকাউন্টারের ব্যাপারে বিশদ কিছু জানি না। শুধু জানি একজন অভিযুক্তের শাস্তি হয়েছে। ধর্ষণের সাজা এমনই হওয়া উচিত।” স্থানীয় মানুষ জানিয়েছে, দু’জনেই লরির খালাসি হিসাবে কাজ করত। গরিব পরিবারের ছেলে, লেখাপড়া কিছুই শেখেনি। ছোট থেকেই মদে আসক্তি। বাড়ির লোক কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। কিন্তু ভালই রোজগার করত। বিলাসবহুল জীবনযাপন করত।

The post ‘আমাকেও মেরে ফেলো’, কাতর আর্তি হায়দরাবাদ এনকাউন্টারে খতম অভিযুক্তের স্ত্রীর appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement