সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিরোধের আরেক নাম পঞ্জশির। সমস্ত আফগানিস্তান দখল করলেও হিন্দুকুশের বুকে ওই পাহাড়ঘেরা অঞ্চলটিতে বেকায়দায় পড়েছে তালিবান। ওই প্রদেশে লড়াই চালাচ্ছেন ‘পঞ্জশিরের সিংহ’ নামে বিখ্যাত প্রয়াত যুদ্ধপতি আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ। তাই এবার ‘সিংহশাবক’-কে বাগে আনতে গুয়ানতানামো বে-র প্রাক্তন বন্দি কুখ্যাত বন্দি মুল্লা আবদুল কায়ুমকে দায়িত্ব দিয়েছে তালিবান।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বিদ্রোহীদের গড় হিসেবে পরিচিত পঞ্জশিরের মিলিটারি কমান্ডার হিসেবে আবদুল কায়ুমকে নিযুক্ত করেছে তালিবান (Taliban)। একইসঙ্গে, বাঘলান প্রদেশের আন্দারাব অঞ্চলের সেনাকর্তা হিসেবেও নিযুক্ত করা হয়েছে তাকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে পঞ্জশিরে তালিবানের সঙ্গে লড়াই করছে বিরোধী জোট ‘নর্দার্ন অ্যালায়্যান্স’। এই জোটের পোশাকি নাম ‘ন্যাশনাল রেসিস্ট্যানস ফ্রন্ট’ (NRFA)। মাসুদের সঙ্গে রয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ ও আফগান সেনাবাহিনীর প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সামি সাদাত। তাদের যৌথ অভিযানে রীতিমতো নাকাচোবানি খেতে হচ্ছে তালিবানকে।
[আরও পড়ুন: ঘানির মতো পালাননি মাসুদ আহমেদ, রয়েছেন পঞ্জশিরেই, দাবি প্রতিরোধ বাহিনীর}
এহেন পরিস্থিতিতে পঞ্জশিরের দখল নিতে ও মাসুদকে বাগে আনতে মুল্লা আবদুল কায়ুমকে দায়িত্ব দিয়েছে তালিবান। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একটি রিপোর্ট মোতাবেক, ২০০১ সালে আফগানিস্তানে বন্দি হয় কায়ুম। ছ’বছর ধরে কিউবার কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারে মার্কিন সেনার হাতে বন্দি ছিল কায়ুম। ২০০৭ সালে আফগানিস্তানে ফেরত আনা হয় তাকে। তালিবান কমান্ডারদের মধ্যেও নৃশংস্ বলে কুখ্যাত ওই তালিবান জঙ্গি। তারপর, দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানে তালিবান ফৌজের পরিচালনা করেছে কায়ুম। তাই ক্ষমতা দখলের পর বছর ঘুরতেই পঞ্জশিরের ভার তার হাতেই তুলে দিয়েছে তালিবান নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য, আজ থেকে নয়, সেই আশির দশক থেকেই আফগানিস্তানের (Afghanistan) সোভিয়েত-বিরোধী লড়াইয়ের মুখ ছিল পঞ্জশির। আফগান মুজাহিদ কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদ ছিলেন সেই আন্দোলনের পুরোধা। সময় দাঁড়িয়ে থাকে না। এই মুহূর্তে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেই পঞ্জশিরেরই এক নেতার নাম উঠে আসছে। তিনি আহমেদ মাসুদ। পঞ্জশিরের কিংবদন্তি ‘সিংহ’ আহমেদ শাহ মাসুদের বড় সন্তান। পাক বিমানবাহিনীর এবং তালিবানের হামলায় পঞ্জশির উপত্যকার জনবসতিগুলি হাতছাড়া হয়েছে মাসুদ বাহিনীর। তবে তাজিক যোদ্ধারা হিন্দুকুশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন বলে খবর।