সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’দশকের খোলা হাওয়ার শেষে আবারও কার্যত গৃহবন্দি আফগান মহিলারা। তালিবানি জমানায় ফতোয়ার শিকলে বেঁধে ফেলা হয়েছে তাঁদের। স্কুল-কলেজ ও কর্মক্ষেত্রে আগেই মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল তালিবান (Taliban)। এবার ত্রাণ বিলি করার কাজেও মহিলাদের ব্রাত্য করল জেহাদিরা।
[আরও পড়ুন: তিব্বতে সাঁড়াশি চাপ লালচিনের, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মঠছাড়া করছে বেজিং]
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ জানিয়েছে, মহিলা মানবাধিকার কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের উপর রাশ টেনেছে তালিবান। জেহাদিরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এমন কাজ করতে পারবে না আফগান নারীরা। আফগান সংবাদমাধ্যম টলো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মানবাধিকার সংগঠনটির নারী অধিকার বিষয়ক বিভাগের ডিরেক্টর হিদার বার বলেন, “ত্রাণ বিলি করার কাজে মহিলাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালিবান। এর ফলে অনেকেই জীবনদায়ী খাবার ও ওষুধ পাচ্ছেন না। আফগানিস্তানে মানবিকতার খাতিরে দুস্থদের মদতে এগিয়ে এসেছে অনেকে। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে মহিলাদের কাজ করতে দিতে হবে এমন কোনও শর্ত কেউ আরোপ করেনি। দুস্থদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে মহিলা কর্মীদের প্রয়োজন পরিস্থিতি তৈরি করেছে।”
আফগান সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বর্তমানে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে মাত্র তিনটি প্রদেশে মহিলা স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রেও বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে তালিবান। যেমন কাজের সময় সংশ্লিষ্ট মহিলাকর্মীর সঙ্গে পরিবারের কোনও পুরুষকে থাকতে হবে। তবে বাস্তবে দেখা গিয়েছে তেমনটা সম্ভব নয়। ফলে দেশটিতে ত্রাণকার্য চালিয়ে যাওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, য়েকদিন আগেই কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে জেহাদি সংগঠনটি। পড়ুয়া, শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মী, কোনও মহিলাকেই আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এহেন তালিবানি ফতোয়ায় মহিলাদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে বড়সড় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে দেশে। এই ফরমান জারি করেছিল কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ‘বিএ পাশ’ উপাচার্য মহম্মদ আশরফ ঘাইরত। যার প্রতিবাদে ইস্তফা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ জন শিক্ষক।